‘দেশের কোনো সম্পদ বিদেশিদের দেওয়ার অধিকার কারোর নেই’

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

বন্দর রক্ষা ও করিডোরের বিপক্ষে ঢাকার শাহবাগে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন
একতা প্রতিবেদক : সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন বলেছেন, ড. ইউনূস আপনি ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দেওয়ার কথা বললেও তা বাদ দিয়ে আপনি চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ডিসেম্বর মাসে চুক্তি করবেন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি আমরা করতে দিব না। আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে দিব না। স্বাধীনতার পর থেকেই বুর্জোয়া শাসকগোষ্ঠীরা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে আসছে। বাংলাদেশের জনগণের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোন অধিকার ইউনূস সরকারের নেই। এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে তা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থবিরোধী শক্তিদের উৎখাত করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি টার্মিনাল লালদিয়া, নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল ও বে টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গত ১৭ অক্টোবর বিকাল ৪ টায় শাহবাগে ‘বন্দর রক্ষা ও করিডোর বিরোধী আন্দোলন’ এই ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন। সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর পূর্বেও ১৯৮ বছরের জন্য বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। রাজপথ ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হয়েছিল। ড. ইউনূস বলেছেন জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে নাকি আমরা বর্বর থেকে সভ্য হয়েছি। আমরা বলতে চাই, আমরা সভ্যই ছিলাম, আপনি বর্বর হয়ে থাকলে আপনি সভ্য হয়ে উঠুন। বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনরায় ঘোষিত হয়েছে। জনরায় উপেক্ষা করে যেকোন উপায়ে বন্দর ইজারা দিতে চান ড. ইউনূস। দেশের স্বার্থ উপেক্ষা করে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত রুখে দেওয়া হবে। ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, শুধুমাত্র বিদেশিদের সুবিধা করে দিতেই ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে চায়। গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর যে আমরা স্বপ্ন দেখেছি তা বেহাত হয়ে গেছে, যেমন মুক্তিযুদ্ধ ও ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের যে প্রকৃত চেতনা তার বিপরীতে হাঁটছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে আমাদের জাতীয় স্বার্থ জড়িত। ইউনূস সরকারের পদক্ষেপ জাতীয় স্বার্থ বিরোধী। সভাপতির বক্তব্যে ডা. এম এ সাঈদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে রক্ষা করা একটি মুক্তির আন্দোলন। যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা ধারণ করেন তাদের বন্দর রক্ষা আন্দোলনে যুক্ত হতে আহ্বান জানাই। জনগণকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী যেকোন কর্মকাণ্ড প্রতিহত করা হবে। ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সভাপতি ডা. এম এ সাঈদের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও সিপিবর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন, ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, কৃষক সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সভাপতি গৌতম শীল, হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত, গৃহশ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ময়না আক্তার ও কৃষিবিদ ইউনিয়নের নেতা শ্যামল বিশ্বাস। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বন্দর ও জাতীয় সম্পদ রক্ষায় লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দে। প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লুনা নূর, মানবেন্দ্র দেব, ফয়েজ উল্লাহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের অন্যতম নেতা অনন্ত ধামাই, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি মশাল মিছিল শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..