শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান

নারীর রাজনৈতিক কনভেনশন

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

ঢাকার মতিঝিলে বিসিআইসি মিলনায়তনে দিনব্যাপী নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনে উপস্থিতি
একতা প্রতিবেদক : সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ছাড়া নারীমুক্তি সম্ভব নয়। তাই নারীমুক্তির লক্ষ্যে শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে নারীর রাজনৈতিক কনভেনশন। গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার মতিঝিলে বিসিআইসি মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টায় গণসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া নারীর রাজনৈতিক কনভেনশনেন বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপত্বি করেন প্রথিতযশা চিকিৎসক ডা. আক্তার বানু, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও বস্তিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি কুলসুম বেগম। কনভেনশনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাবেক সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক এএন রাশেদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপ্তি দত্ত, মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, লেখক গবেষক মাহা মির্জা, নারীনেত্রী লীলা রায়, সীমা দত্ত, রুখসানা আফরোজ আশা, শুভ্রা কুবি, ফারহানা আক্তার শাপলা, নাছিমা আক্তার, পার্বতী রিচিল, শামীমা নাসরীন, ইতি রাণী দাস, সেলিনা বানু, হামিদা খাতুন, সাহানারা বেগম, খোরশেদুন নাহার ভূঁইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, আসমা খাতুন, রিসালাযুন্নাহার প্রমুখ। কনভেনশনের খসড়া ঘোষণা উত্থাপন করেন মোরসালিনা আনিকা। কনভেনশন পরিচালনা করেন মাহমুদা দীপা ও মনীষা ওয়াহিদ। কনভেনশনে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মানবমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে চাইলে অবশ্যই নারীমুক্তির সংগ্রামকে শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর নারীদের অধিকারহীনতা, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়নের নেপথ্যে অর্থনৈতিক-সামাজিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি রয়েছে। এটি কেবল ব্যক্তি নারী-পুরুষ সম্পর্কের বিষয় নয়। রাষ্ট্রীয় কাঠামো, পুঁজিবাদ, সামন্ত-ধর্মীয় কর্তৃত্ব, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং সাম্রাজ্যবাদ ও অধিপত্যবাদ এসবই নারীমুক্তির প্রতিপক্ষ। তাই নারীমুক্তির প্রশ্নকে শুধু পৃথক ও সংকীর্ণ নারী সংস্কারের মধ্যে নয় বরং রাষ্ট্র-অর্থনীতি-সংস্কৃতি-পরিবারসহ সব স্তরের মৌলিক পরিবর্তনের সংগ্রাম হিসেবে দেখতে হবে। অধ্যাপক এএন রাশেদা প্রশ্ন তোলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতেও কি নারীমুক্তি সম্ভব হয়েছে? সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর অধিকার নেই। অবহেলিত দেশের নারী সমাজ। দারিদ্র্যতা বেড়েছে। সেখানে নারীরা আরো বেশি দ্ররিদ্র। তিনি বলেন, দেশের অবহেলিত নারীসমাজকে এক করতে হবে। রাজনৈতিক লড়াইয়ে অগ্রসর হতে হবে। অর্থনীতিবিদ ও লেখক মাহা মির্জা বলেন, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে শুধু নারীদের এমপি বানালেই হবে না। দেখতে হবে তারা আদৌ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবী মেহনতি নারীর কথা তারা বলছেন কিনা। তিনি আরো বলেন, নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য ও অনিরাপদ কর্মপরিবেশ দূর করা শুধু ন্যায্যতার প্রশ্নই নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে যুক্ত। এজন্য কর্মপরিবেশ উন্নত করা এবং নারী-পুরুষের সমকাজের সমমজুরি নিশ্চিত করার সংগ্রাম আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য। মোশাহিদা সুলতানা ঋতু বলেন, নারী নিপীড়নের বস্তুগত শেকড় উৎপাদন সম্পর্ক ও শ্রেণি কাঠামোর গভীরে বিরাজমান। নারী ওপর শোষণ-বৈষম্য-নিপীড়ন একটি স্বতন্ত্র ঐতিহাসিক সম্পর্ক হলেও পুঁজিবাদের কাঠামোগত প্রয়োজনের কারণে এটি শ্রেণি শোষণ ও বৈষম্যের সঙ্গে গাঁথা। এজন্য নারী প্রশ্ন শ্রেণি প্রশ্নের সম্পূর্ণ অধীন নয়, আবার সম্পূর্ণ স্বাধীন ও স্বতন্ত্রও নয়। এটা শ্রেণি-পিতৃতন্ত্র-বর্ণ ও পুঁজিবাদের সাথে আন্তঃসংযুক্ত এক ব্যবস্থা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপ্তি দত্ত বলেন, নারীর অধিকারহীনতা ও নারীর ওপর নিপীড়নের মূল উৎস রাষ্ট্র, পিতৃতন্ত্র ও পুঁজিবাদের যৌথ কাঠামো। শ্রম, সম্পত্তি, পরিবার, ধর্ম, সংস্কৃতিসহ সবক্ষেত্রেই নারীর ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উপাদান রয়েছে। বক্তারা বলেন, কনভেনশনে গৃহীত সনদ শুধু নীতিগত ঘোষণা বা কিছু দাবির সমষ্টি হবে না; বরং এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রূপান্তরমূলক রাজনৈতিক কর্মসূচি। যার ভিত্তিতে আগামী দিনে দেশের নারী সমাজ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ভূমিকা রাখবে। কনভেনশনে বাউল গান পরিবেশন করেন এলিজা পুতুল, আলমগীর বাউল। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করেন জলি পাল, গার্মেন্ট শ্রমিক সুইটি বেগম।
প্রথম পাতা
দেশের সংকট-নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান
পীর-ফকির-বাউলদের ওপর হামলায় পুলিশকে সন্ত্রাসের পক্ষে ব্যবহার করছে সরকার
‘রাষ্ট্রের চরিত্র বদল না হওয়ায় শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না’
অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করুন
‘মেহেরবানি’
সংশোধনী
আরপিও’র অগণতান্ত্রিক সংশোধনী এবং নির্বাচনী ব্যয় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল কর
পোল্যান্ডের কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি
লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে চা-শ্রমিকদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে
বন্দর ইজারার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে ৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে বিক্ষোভ

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..