
একতা প্রতিবেদক ;
বিচ্ছিন্নভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ না করে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। এছাড়াও ইউনেস্কোর সুপারিশ মোতাবেক শিক্ষা খাতে জিডিপি’র ৬% বরাদ্দের দাবিসহ মোট এগারো দফা দাবিতে সাংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটি।
গত ২ মে সকাল ১০টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে এই সাংবাদ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার।
এগারো দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও শতভাগ উৎসবভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসাভাতা প্রদান; অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ১১টি বিষয়ের উপর গঠিত ১১টি সংস্কার কমিশনের ন্যায় শিক্ষা বিষয়ের উপরও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন; উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পদ বাতিল করে পূর্বের ন্যায় সহকারী অধ্যাপকের পদ চালু করা; বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তসহ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবিলম্বে এমপিওভুক্ত করা; বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় অবসর সুবিধা প্রদান করা এই বিধান না হওয়া পর্যন্ত অবসরে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর তহবিলের টাকা প্রদান নিশ্চিত করা; অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা; বেসরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ন্যায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকুরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করা; শিক্ষা প্রশাসনে বেসরকারি শিক্ষকদের আনুপাতিক হারে পদায়ন করা; অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্বের ন্যায় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা এবং অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগও শিক্ষক নিয়োগের ন্যায় এনটিআরসিএ বা অন্য যেকোনো বিকল্প শিক্ষক নিয়োগ কমিশনের মাধ্যমে করা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের উপর হামলা, নির্যাতন, লাঞ্ছনা ও চাকুরিতচ্যুতি বন্ধ করা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্বশাসন প্রদান ইত্যাদি দাবি তুলে ধরেন।
এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাকবিশিসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। সাংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান, অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান মজুমদার, অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, প্রফেসর ড. খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, অধ্যক্ষ আরিফ আহমেদ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক মোনাব্বর হোসেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল জব্বার, অধ্যাপক সৈয়দা শাহিনা পারভিন, অধ্যপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, প্রফেসর ড. শামসুদ্দীন ইলিয়াস, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ দেবপ্রিয় বড়ুয়া, অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক অজয় কুমার রায়, অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক ফারুক আহমদ, অধ্যাপক মোছা. মাহফুজা খাতুন, অধ্যাপক মঞ্জুরুল আহসান মিন্টু, অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম লাবলু, অধ্যাপক গোপাল সাহা, অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা জালাল, অধ্যাপক সাফায়েত হাসান, অধ্যাপক নূরশাদ আলী, অধ্যাপক আবু সালেহ সিদ্দিক, অধ্যাপক বাবু দেবনাথ সূত্রধর প্রমুখ।
এগারো দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাকবিশিস নেতৃবৃন্দ ৭ মে সকাল ১১টায় সারাদেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাকবিশিস এর ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মতবিনিময়; ২৪ মে, সকাল সাড়ে ৯ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব ঢাকায় শিক্ষা ও শিক্ষক আন্দোলনের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক করবে বলে জানান।
শিক্ষকদের এসব যৌক্তিক দাবি না মানা হলে বাকবিশিস অপরাপর সকল শিক্ষক সংগঠনকে সাথে নিয়ে অচিরেই বৃহত্তর শিক্ষক আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুশিয়ারি দেন।