খাগড়াছড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন বিভিন্ন বাম দলের নেতারা একতা প্রতিবেদক :
খাগড়াছড়িতে ধর্ষণে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার-বিচার, সেনা ছত্র-ছায়ায় বিভিন্ন আদিবাসী পাড়ায় সন্ত্রাসী হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও নিহত-আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন বামপন্থি নেতৃবৃন্দ।
গত ৯ অক্টোবর বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় গণফ্রন্ট ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা (মগ পাড়া), স্বনির্ভর বাজার, গুইমারার চেঙ্গুলিয়া, রামুসে বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে এই দাবি জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ সকালে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাসায় গিয়ে ভিক্টিম ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন। পরে সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক, দুপুর ১২টায় পুলিশ সুপার, ১টায় সিভিল সার্জন ও সরকারের লিগাল এইড কমিটির আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এসময় নেতৃবৃন্দ ডিসি, এসপি, সিভিল সার্জন ও লিগাল এইড কমিটি পরিদর্শনকারী নেতৃবৃন্দের অভিযোগগুলো মনযোগ সহকারে শুনেন এবং প্রতিকারের আশ্বাস দেন। এছাড়া জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তাদের নিজেদের কনসার্ন সম্পর্কে জানান নেতৃবৃন্দ।
পরে বিকাল ৪টায় গুইমারায় রামুসে বাজারে সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী হামলায় ভাংচুর এবং আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ি-ঘর দোকানপাট পরিদর্শন করেন বামনেতারা। তারা গুইমারার চেঙ্গুলায়ায় নিহত-আহতদের পরিবার ও এলাকার পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাত এবং মতবিনিময় করেন।
বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, কমিউনিস্ট লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নেতা আব্দুল আলী, জাতীয় গণফ্রন্টের নেতা রজত হুদা, কামরুজ্জামান ফিরোজ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নেতা ডা. হারুন অর রশীদ, মার্জিয়া প্রভা, সত্যজিৎ বিশ্বাস, সাঈদুল হক নিশান প্রমুখ।
বামপন্থি নেতৃবৃন্দ ধর্ষণে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার-বিচার, সেনা ছত্র-ছায়ায় বিভিন্ন আদিবাসী পাড়ায় সন্ত্রাসী হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও নিহত-আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
একইসাথে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর হাসপাতালের ছাড়পত্র থানার ওসি কর্তৃক যেটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে সেটা ভিক্টিমের পরিবারকে ফেরত দেওয়া, নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুর্নর্বাসনের দাবিও জানান।
নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামে অঘোষিত সেনা শাসন প্রত্যাহার করারও দাবি করেন। খাগড়াছড়ির ঘটনায় দেড় দুই হাজার অজ্ঞাতনামা মানুষের নামে যে মামলাগুলো হয়েছে তাতে কোন নিরাপরাধ মানুষ হয়রানীর শিকার না হয় নেতৃবৃন্দ তারও আহ্বান জানান।
সব শেষে পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসন আইনশৃংখলা বাহিনী ও আদিবাসী বাঙালি সকল নাগরিকের প্রতি ঊদাত্ত আহ্বান জানান তারা।