মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুলকে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বিক্ষোভ মিছিলএকতা প্রতিবেদক:
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুধু একটি রায় নয়, এটি ইতিহাসের দায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা। যুদ্ধাপরাধীর মুক্তি দেওয়া মানে একাত্তরের শহীদদের রক্তের সঙ্গে শুধু বিশ্বাসঘাতকতা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনার উপর এক নির্মম আঘাত।
রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ৩০ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। এসব তারা এসব কথা বলেন। সমাবেশ থেকে নারীর ওপর ফ্যাসিস্ট আচরণ ও হামলকারীদের বিচার দাবি করেন।
একই দাবিতে গত ২৭ মে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ঢাবির মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।
ছাত্র ইউনিয়নের সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রিজম ফকিরের সঞ্চালনায় ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্থানীয় সহযোগী সংগঠন ছাত্রশিবির (তৎকালীন ছাত্রসংঘ) ও আল-বদর নেতা ছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। এই রাজাকার রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী হিসেবে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আপিল বিভাগ কর্তৃক তার খালাস গভীর হতাশা ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতা সৃষ্টি করছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে এমন রায় পুনঃবিবেচনা আবশ্যক। অবিলম্বে এই খালাসের রায় বাতিল করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
ছাত্রনেতারা বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল প্রগতিশীল শক্তি এই রায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন এবং শহীদদের রক্তের ঋণ শোধে আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হতে হবে নিরপেক্ষ, যথাযথ প্রমাণ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে। রাজাকারদের রক্ষা নয়, বরং তাদের বিচারই হোক জাতির প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রতিফলন।