
একতা বিজ্ঞান ডেস্ক :
মহাবিশ্বের অদেখা বস্তু -Dark Matter‑র
সরাসরি প্রমাণ?
২৬ নভেম্বর ২০২৫‑তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ৯০ বছরের বেশি সময়ের অনুসন্ধানের পর হতে পারে প্রথমবারের মতো ‘অদেখা পদার্থ’ গ্রহীতের সরাসরি প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষকরা Fermi Gamma-ray Space Telescope-র পর্যবেক্ষণ থেকে গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ে‑র কেন্দ্র থেকে এসেছে এমন গ্যামা-কিরণের তরঙ্গ পেয়েছেন, যা তত্ত্ব অনুযায়ী ডার্ক ম্যাটারের সম্ভাব্য ধ্বংস বা ইন্টারঅ্যাকশনের একটি স্বাক্ষর। যদি এটি সঠিক প্রমাণ হয়, তাহলে এটি হতে যাচ্ছে আধুনিক ব্রহ্মাণ্ড বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব মাইলফলক।
একটি নতুন সম্ভাব্য বসতি
নিকটবর্তী সুপার-আর্থ গ্রহ
২৩ নভেম্বর ২০২৫‑তে বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেছেন, মাত্র ১৮ আলোকবর্ষ দূরত্বে পাওয়া গেছে এক সুপার-আর্থ গ্রহ - GJ 251 c - যা তার নক্ষত্রের “যোগ্য বসতি অঞ্চল”-এ অবস্থিত। অর্থাৎ, সেখানে তাপমাত্রা এমন হতে পারে যে পৃথিবীর মতোই তরল পানি থাকতে পারে। গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতের বৃহৎ টেলিস্কোপগুলো হয়তো সরাসরি ছবিসহ বিশ্লেষণও করতে পারবে। এই আবিষ্কার পরবর্তী জীবনের সন্ধানে নতুন দিশা খুলেছে।
ব্ল্যাক হোলের চরম তাণ্ডব
১০ ট্রিলিয়ন সূর্য্যর শক্তি সমান ফ্লেয়ার
২০২৫ সালের শুরুতে, বিশ্লেষণ করা হয়েছে এমন এক ঘটনা- Tidal Disruption Event (TDE), যেখানে একটি বহু ভরবিশিষ্ট পাঠঘাত ব্ল্যাক হোল তার মহাকর্ষের প্রভাব দিয়ে এক গ্রহকে ছিঁড়ে দিয়েছে। এর ফলে তৈরি হয়েছে বিশাল শক্তির ফ্লেয়ার, যা প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন সূর্যের সমান শক্তি ছড়িয়েছে। এই বিশাল উন্মত্ত ফ্লেয়ার মানব ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে ধরা পড়েছে।
জিপ্রোটন থেকে নিউট্রিনো
মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত
চীনের পারমাণবিক পরীক্ষাগারে চালু হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম নিউট্রিনো ডিটেক্টর - Jiangmen Underground Neutrino Observatory (JUNO)। মাত্র ৫৯ দিনের মধ্যে এর পরীক্ষামূলক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে নেপথ্য অদৃশ্য কণাগুলোর (নিউট্রিনো) গতিবিজ্ঞান ও ভরবিভেদের যত্নসহকারে পরিমাপ সম্ভব হয়েছে। এই ফলাফল হয়তো আমাদের ধরণের পদার্থবিজ্ঞানের সীমা প্রসারিত করবে, কারণ নিউট্রিনোগুলোর আচরণ বর্তমান তত্ত্বে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যায় না।
কেন এই মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ?
এই সব অগ্রগতি শুধু নতুন তথ্য নিয়ে আসেনি- এর সঙ্গে এসেছে নতুন প্রশ্ন, নতুন সন্দেহ, এবং নতুন সম্ভাবনা। অদেখা পদার্থের সরাসরি চিহ্ন পেয়েছি কি? আমরা কি বুঝতে সক্ষম হব, যে গ্যালাক্সির ২৫‑৩০ শতাংশ বেশিরভাগই অদৃশ্য হলেও তাঁর ক্ষমতা ও প্রভাব অনুভূত? নতুন সুপার-আর্থ, ফলে অন্য গ্রহেও জীবন বর্তমান কি? ব্ল্যাক‑হোলের ভয়াবহ শক্তিতে গ্রহ ধ্বংসের ঘটনা আমাদের কী শেখায় মহাবিশ্বীয় ধ্বংস‑সৃজন সম্পর্কে? এবং সর্বশেষ - মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে পরিবর্তন আসছে কি? এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, বিজ্ঞান আজো থামেনি। নতুন আবিষ্কার, নতুন বিশ্লেষণ এবং নতুন প্রযুক্তি সবসময়ই মানুষের জানার ভূগোল বিস্তৃত করে চলেছে।