পহেলা বৈশাখে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সিপিবি আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষগাইবান্ধা সংবাদদাতা :
গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুরে বাংলা ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে শোভাযাত্রা ও পান্তা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, দারিয়াপুর অঞ্চল কমিটি এর আয়োজন করে। পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টার দিকে পার্টির আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিন যুগ ধরে পার্টির কর্মকাণ্ডে নিরবিচ্ছিন্নভাবে অংশ নেয়া ৮৫ বছর বয়সী প্রবীণ ছাবেদ আলী।
উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, গাইবান্ধা সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি ছাদেকুল ইসলাম, জেলা সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ জামান রব্বানী, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মিতা হাসান, তপন কুমার বর্মন, জেলা কমিটির সদস্য সন্তোষ বর্মন, ময়নুল কবীর মণ্ডল, এমদাদুল হক মিলন প্রমুখ। সিপিবি, দারিয়াপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মাস্টারের সভাপতিত্বে অঞ্চল ও শাখা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে দারিয়াপুর আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট স্কুল মাঠে পান্তা উৎসবে মিলিত হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পাঁচ শতাধিক মানুষ পান্তা উৎসবে অংশ নিয়ে পান্তা খায়।
উল্লেখ্য গত ১৫বছর ধরে পহেলা বৈশাখে দারিয়াপুর অঞ্চল কমিউনিস্ট পার্টি ধারাবাহিকভাবে এ আয়োজন করে আসছে। শহুরে উৎসবের থেকে আলাদা এ উৎসব। আগের দিন সন্ধ্যায় পার্টির বিভিন্ন শাখা থেকে সংগৃহীত চাল আসে পার্টি কার্যালয়ে, আসে কৃষকদের ক্ষেত থেকে পাট শাক, আলু। পার্টির ব্যবসায়ী কমরেডরা দেন পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ, তেল। পার্শ্ববর্তী কোন কমরেডের বাড়িতে হয় রান্না। সকালেই তৈরি হয় পান্তা। পহেলা বৈশাখ সকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক, ক্ষেতমজুর, শ্রমিক, নারী, শিশুরা আসে। সাথে নিয়ে আসে জীবিকার প্রয়োজনে তারা যেটা ব্যবহার করে থাকে। আর নিয়ে আসে পুরাতন ঐতিহ্যের যার ঘরে যা আছে। সেগুলো নিয়ে অংশ নেয় শোভাযাত্রায়। ঢোলের তালে তালে নেচে গেয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পান্তা খেতে বসে একসাথে। তৈরি হয় এক অন্যরকম পরিবেশ। শহুরে কৃত্রিম আয়োজনের থেকে আলাদা এ উৎসবে পার্টির নেতাকর্মীর বাইরেও এলাকার সাধারণ মানুষ, সুধীজন, সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।