যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ছে

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

# ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি # ২০২২ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে ন্যান্সি পেলোসির বাড়িতে ঢুকে তার স্বামীকে হাতুড়িপেটা # ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে সহিংস হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকেরা # ২০২৩ সালে এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্বের ৫০টি সহিংসতাপ্রবণ দেশের তালিকায় ঠাঁই পায় যুক্তরাষ্ট্র একতা বিদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ছে রাজনৈতিক সহিংসতা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়াসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংঘটিত বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনেও রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী। গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যায় ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় পাশের একটি ভবনের ছাদ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। হামলার পর ট্রাম্পের একটি কান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন সন্দেহভাজন হামলাকারী টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বেথেল পার্ক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। প্রভাবশালী সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট বলছে, ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনাটি বেদনাদায়ক হলেও বিস্ময়কর নয়। ২০১৭ সালে রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল বেসবল টিমের প্র্যাকটিস চলাকালে এক ব্যক্তির ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন স্টিভ স্ক্যালাইস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা স্ক্যালাইস বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। ২০২২ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়েছিল এক উন্মাদ। ওই ঘটনায় ন্যান্সি পেলোসির বয়োবৃদ্ধ স্বামীকে হাতুড়ি দিয়ে প্রহার করতে থাকে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে ডেনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হওয়ার পর তার উত্তেজিত সমর্থকেরা ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে সহিংস হামলা চালায়। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির সহিংসতা সত্ত্বেও এরই মধ্যে রিপাবলিকানরা সমর্থন করছেন ট্রাম্পকে। সেই সমর্থন এখন আরও বাড়বে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্বের ৫০টি সহিংসতাপ্রবণ দেশের তালিকায় নাম ওঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নাম ছিল ওই তালিকায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউসকনসিন অঙ্গরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এসিএলইডি) ওই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ২৪০টি দেশ ও অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহ করে এই গবেষণা গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। তারা বলছিল, দেশগুলোতে রাজনৈতিক কারণে সহিংসতা বেড়েছে। এসিএলইডি গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পূর্ববর্তী এক বছরের তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল। এতে বলা হয়েছিল, পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এ বছর (২০২৩ সাল) সহিসংতা ২৭ শতাংশ বেড়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১ লাখ ৩৯ হাজার। প্রতিবছর চারটি মানদণ্ড ধরে সহিংস দেশের তালিকা প্রকাশ করে এসিএলইডি। এই মানদণ্ডগুলো হলো সহিংসতায় নিহত হওয়ার ঘটনা, জনসাধারণের জন্য ঝুঁকি, সহিংসতাপ্রবণ এলাকার আয়তন, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংখ্যা। যে ৫০টি দেশ সহিংসতাপ্রবণ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে, সেগুলোকে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো, ‘চরম’, ‘উচ্চ’ ও ‘উত্তাল’ সহিংসতাপ্রবণ দেশ। এসিএলইডি জানায়, মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি সশস্ত্র সংগঠন রয়েছে। তালিকার শীর্ষে রয়েছে দেশটি। এরপর রয়েছে সিরিয়া ও মেক্সিকো। উত্তাল সহিংস দেশের তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় রয়েছে লিবিয়া, ঘানা ও শাদ। আর বাকি দেশগুলোর অধিকাংশই আফ্রিকা ও এশিয়ার। নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদন এবং এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থান পাওয়া প্রসঙ্গে এসিএলইডির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান স্যাম জোনস বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই তালিকায় স্থান পাওয়ার মধ্য দিয়ে এটা সামনে এল যে রাজনৈতিক সহিংসতা শুধু দরিদ্র ও অগণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তালিকার যে ধাপে স্থান পেয়েছে, সেই তালিকায় সাধারণত সহিংসতাপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..