শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি শোষণ-বৈষম্যের শিকার

Posted: 04 মে, 2025

একতা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, দেশের মেহনতি শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি শোষণ-বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। দেশের রাজনীতি অর্থনীতি নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে অথচ এসব মানুষের কথা অনুচ্চারিত থেকে যায়। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম স্লোগান হিসেবে সামনে এসেছিল বৈষম্য মুক্তির কথা। কিন্তু এখন আর এই শ্রমজীবী মানুষের বৈষম্য মুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। ১ মে মহান শ্রমিক দিবসে খুলনার সেনহাটি শিববাড়ি চত্বরে সিপিবি দিঘলিয়া উপজেলা কমিটি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স একথা বলেন। বিকেল ৪টার দিকে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শ্রমিকরা অথচ জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষিত হয়নি। প্রকৃত কৃষক ফসলের লাভজনক দাম না পেলেও উৎপাদন অব্যাহত রেখে চলেছে। বিদেশে অবস্থানরত শ্রমজীবী মানুষ ওই দেশে মানবেতর জীবনযাপন করে, উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠাচ্ছে। আর দেশের এক বিশেষ গোষ্ঠীর মানুষ এই দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে ওই দেশকেই তাদের নিজেদের আবাসভূমি হিসেবে গড়ে তুলছে। এ অবস্থার পরিবর্তন করে উৎপাদনের সাথে জড়িতদের প্রকৃত মর্যাদা, তাদের জীবন মনের উন্নয়ন করার কাজটি করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এই কাজটি করতে পারে দেশের বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তাই এই রাজনৈতিক শক্তিকেই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে পহেলা মে এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য ব্যবস্থা বদলে সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক অনতিবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি জানান। তিনি খুলনায় রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকলসহ অন্যান্য বন্ধ কারখানা চালু না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে শ্রমজীবী মানুষ জীবন দেয় অথচ তাদের অধিকার অর্জিত হয় না। তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের কাজের নিশ্চয়তার দাবি করেন। সিপিবি নেতা মৃণাল পালের সভাপতিত্বে ও জেলা কমিটির সদস্য এস এম চন্দনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিটির সভাপতি ডাক্তার মনোজ দাশ, জেলা সাধারণ সম্পাদক এসএ রশীদ, খুলনা মহানগর কমিটির সভাপতি এইচ এম শাহাদাত, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মিজানুর রহমান বাবু, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান স্বপন, নিত্যানন্দ ঢালী, গাজী আফজাল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, উপজেলা কমিটির নেতা সাইদুল ইসলাম, সুখলাল বিশ্বাস, তারক দাশ প্রমুখ। রুহিন হোসেন প্রিন্স তাঁর বক্তব্যে উপজেলা ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ, নগরঘাট হতে আড়ুয়া পর্যন্ত রাস্তা বর্ধিতকরণ ও সংস্কারসহ পিপলস এবং ক্রিসেন্ট মিলের মধ্যবর্তী বন্ধ রাস্তা চালুর জোর দাবি জানান। জনসভার আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে পার্টির নেতা-কর্মীরা লাল পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগ দেয়। জনসভা শেষে শিল্পী কালিদাসসহ স্থানীয় শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করেন।