শ্রমিক-মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্যে পুঁজিবাদী সমাজ ভাঙতে হবে

Posted: 04 মে, 2025

একতা প্রতিবেদক : নব্য পুঁজিবাদের আক্রমণে শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নব্য পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাকে পরাজিত করা ছাড়া শ্রমিক-মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি সম্ভব না। এজন্য পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা ভাঙতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। ১ মে মহান শ্রমিক দিবসে রাজধানীতে সিপিবি আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম একথা বলেন। মহান মে দিবসে শিকাগোর বীর শহীদ শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সকালের দিকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এসময় সিপিবির সভাপতি বলেন, আমাদের দেশে শ্রমিক-মেহনতি মানুষ নির্মমভাবে শোষিত। আট ঘণ্টা শ্রমের দাবি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে অর্জিত অধিকারগুলো হারিয়েছে। পাট, বস্ত্র, চিনি, সুতাকল একে একে বন্ধ হয়ে গেছে, হাজার হাজার শ্রমিক বেকার। শাসকশ্রেণির এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের পরও দেশে অনেক গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রমিকরা কাজ করেও বেতন পাচ্ছে না, মালিকরা তাদেরকে রাস্তায় ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে ৬ লক্ষাধিক আউটসোর্সিং শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছে, এদের চাকুরির নিশ্চয়তা নেই, সংগঠন করার অধিকার নেই। এদের শ্রম আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, যা গর্হিত অপরাধ। পূর্বের সরকারগুলোর ন্যায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও মালিকদের স্বার্থরক্ষা করছে। গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবেও কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ বলেন, পাকিস্তান আমলে মে দিবস পালন নিষিদ্ধ ছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে এটা আমরা অর্জন করেছি। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, আঞ্চলিকতা শ্রমিকদের বিভক্ত করে ঐক্য নষ্ট করে। তাই সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ ও আঞ্চলিকতার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে বলে যোগ করেন তিনি। সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহসান হাবিব লাবলুর সঞ্চালনায় এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) সহ-সভাপতি শ্রমিকনেতা মাহাবুব আলম, শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ প্রমুখ। সমাবেশ থেকে- ৩০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, কারখানায় শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ও বাসস্থানের ব্যবস্থা, ছাঁটাই-নির্যাতন, হামলা-হামলা ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশ শেষে লাল পতাকা সজ্জিত একটি মিছিল পল্টনের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।