অর্থনীতির সব হিসাব ওলটপালট
Posted: 28 জুলাই, 2024
রপ্তানি আয়ের প্রকৃত তথ্য
# ২০১৪-১৫ থেকে ১০ অর্থবছরে প্রকৃত রপ্তানি আয় ৪০,১২,০০০ কোটি টাকা
# ওই ১০ বছরে ইপিবি রপ্তানি আয় দেখিয়েছে ৪৭,৭৯,০০০ কোটি টাকা
# ১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয় বেশি দেখানো হয়েছে প্রায় ৭,৬৭,০০০ কোটি টাকা
# জিডিপি, জিএনপি, লেনদেনের ভারসাম্যসহ অর্থনীতির সব সূচক সংশোধন করা প্রয়োজন
রপ্তানি আয়ের তথ্য বছরের পর বছর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর মাশুল দিতে হচ্ছে এখন অর্থনীতিকে। হাঠাৎ করে সেই তথ্য সংশোধনের ফলে প্রবৃদ্ধি হিসেবে দেখানো রপ্তানি আয় নেতিবাচক হয়ে গেছে। এতে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর হিসাব ওলটপালট হয়ে গেছে।
রপ্তানির হিসাবে বড় ধরনের গরমিল ধরা পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। রপ্তানিকারকেরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের ফাঁপানো তথ্য দিচ্ছে। সরকারকে খুঁশি করতে অথবা সরকারের চাপে প্রকৃত রপ্তানি আয়ের চেয়ে অনেক বেশি আয় দেখিয়ে আসছিল ইপিবি। এখন ‘থলের বিড়াল’ বেড়িয়ে আসায় হৈচৈ শুরু হয়েছে সারা দেশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবমতে, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর (এপ্রিল) পর্যন্ত ১০ বছরে প্রকৃতপক্ষে রপ্তানি হয়েছে ৩৪০ বিলিয়ন ডলার বা ৪০ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা)। একই সময়ে ইপিবির হিসাবে রপ্তানি দেখানো হয়েছে ৪০৫ বিলিয়ন ডলার বা ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয় বেশি দেখানো হয়েছে ৬৪ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন (৬ হাজার ৪৬৬ কোটি) ডলার বা ৭ লাখ ৬৭ হাজার কোটি টাকা। এটি নতুন অর্থবছরের বাজেটের কাছাকাছি।
ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো রপ্তানি আয়ের তথ্য সংশোধনের পর অর্থনীতির সূচকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আবারও বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের মতে, এত দিন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে গবেষকেরা তথ্য-উপাত্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটিই এখন সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা বলছেন, ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অর্থনীতির নাজুক সময়ে নীতিনির্ধারকেরা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেগুলোর কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা এর ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ কারণে ভুল রপ্তানি তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করা অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোও সংশোধন দরকার। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পরিসংখ্যান কমিশন গঠন করারও দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
ইপিবির রপ্তানি আয়ের তথ্য সংশোধন করে গত ৩ জুলাই প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে গত দুই অর্থবছরের (২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) ১০ মাস করে মোট ২০ মাসে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার উধাও হয়ে গেছে। বছরের পর বছর প্রকৃত তথ্য আড়াল করে ইপিবি রপ্তানির ভুল তথ্য প্রকাশ করে আসছিল। ইপিবির এই তথ্যের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের হিসাব করে এসেছে।
এখন তথ্যে গরমিল ধরা পড়ায় মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), মোট জাতীয় উৎপাদন (জিএনপি), লেনদেনের ভারসাম্য, বিদেশি ঋণ গ্রহণের নীতি সিদ্ধান্তসহ অর্থনীতির অনেক কার্যক্রমের সূচক সংশোধন প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এরই মধ্যে গত ১১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসের (জুলাই-মে) রপ্তানির ‘প্রকৃত তথ্য’ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, এই ১১ মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪ হাজার ৭২ কোটি ৯০ লাখ ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকেরা। এই অঙ্ক আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ কম।
অথচ গত ৪ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক পুরনো হিসাবে রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করেছিল, তাতে গেল অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলার আয়ের তথ্য উল্লেখ ছিল। ওই ১১ মাসে ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবমতে, রপ্তানির ‘প্রকৃত তথ্য’ প্রকাশের পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে রপ্তানি আয় ১ হাজার ৮১ কোটি ডলার কমে গেছে।
পুরনো হিসাবে আগের অর্থবছরের এই ১১ মাসে ৫ হাজার ৫২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি দেখানো হয়েছিল। সংশোধিত হিসাবে তা ৭ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার কমে ৪২ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
সংশোধিত হিসাবে বিশাল অঙ্কের এই রপ্তানি আয় কমে যাওয়ায় দেশের জিডিপির আকারও কমে যাবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এর আগেই নতুন হিসাবে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ওলটপালট হয়ে যাওয়ার তথ্য দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাবে হঠাৎ বড় পরিবর্তন এসেছে; উদ্বৃত্ত থাকা চলতি হিসাবে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আর বড় ঘাটতিতে থাকা আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। আর আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত হয়েছে ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।
অথচ আগের মার্চ পর্যন্ত চলতি হিসাব ছিল উদ্বৃত্ত এবং ঘাটতিতে ছিল আর্থিক হিসাব। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ১০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৩ জুলাই বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের রপ্তানির ‘প্রকৃত তথ্য’ প্রকাশ করে। সেখানে ইপিবির প্রকাশ করা তথ্যের সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ফারাক পাওয়া যায়। এর পর থেকে রপ্তানির তথ্যের গরমিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এনবিআর ও ইপিবির ভুলে এই গরমিল
রপ্তানি আয়ের হিসাবে ব্যাপক গড়মিলের ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ইপিবির ওপর দায় চাপিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ৪ জুলাই অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ডলার-সংকটের কারণে দেশের লেনদেন ভারসাম্য বড় চাপে পড়ে। দীর্ঘদিন পর লেনদেন ভারসাম্যের আর্থিক হিসাব ঘাটতিতে পড়ে যায়। এই ঘাটতি তৈরি হয় রপ্তানি যে পরিমাণ হচ্ছে, সেই পরিমাণ আয় দেশে না আসায় এবং আমদানি বিল যে পরিমাণে পরিশোধ হচ্ছে, সেই পরিমাণ পণ্য দেশে না আসায়। এই ঘাটতি বড় হতে থাকায় প্রকৃত অবস্থা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর এবং ইপিবি মিলে কমিটি গঠন করে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে রপ্তানি আয়ের তথ্য যাচাই-বাছাই শুরু করা হয়।
এক সভায় এনবিআরের প্রতিনিধি সরবরাহ করা রপ্তানির ডেটাসেটে একাধিকবার রপ্তানির হিসাব থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক রপ্তানি আয়ের তথ্য-উপাত্ত তফসিলি ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে সংগ্রহ করে থাকে। ফলে সেই তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে প্রকৃত রপ্তানির তেমন পার্থক্য থাকে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংগ্রহ এবং ইপিবির প্রকাশিত তথ্যে পার্থক্য থাকার কারণগুলো চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, একই রপ্তানি তথ্য এবং পণ্যের এইচএস কোড একাধিকবার ইনপুট দেওয়া হয়েছে। পণ্যের কাটিং, মেকিং এবং ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু তৈরির মাশুল হিসাব হওয়ার কথা, কিন্তু ইপিবি কাপড়সহ সব যন্ত্রাংশের হিসাব করেছে। ইপিবি অনেক সময় নমুনা পণ্যের দামও ইনপুট দিয়েছে, অথচ নমুনা পণ্যের কোনো দাম হিসাবে আসার কথা নয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রয়কে রপ্তানি হিসাবে এবং এসব পণ্য আবার বিদেশে রপ্তানির সময়ও হিসাব করা হয়েছে। সাধারণত পণ্য রপ্তানির সময় রপ্তানির প্রাথমিক ঋণপত্র (এলসি) মূল্য থেকে কিছুটা কম হয়ে থাকে, যা ইপিবি সমন্বয় করে না। এ ছাড়া স্টকলট, ডিসকাউন্ট এবং কমিশনের কারণে ক্ষয়ক্ষতি ইপিবির হিসাবে সমন্বয় হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সংশোধিত ডেটাসেট ব্যবহার করার কারণে লেনদেনের ভারসাম্যের বিবরণীতে ট্রেড ক্রেডিটসহ চলতি হিসাব ও আর্থিক হিসাব সংশোধিত হয়েছে। তবে এর জন্য সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ, চলতি হিসাবে থাকা উদ্বৃত্ত সংশোধিত হয়ে আর্থিক হিসাবে সমন্বয় হয়েছে।
জুনের তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি কেউ
নতুন অর্থবছরের ১১ দিন চলে গেছে; কিন্তু বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনের পণ্য রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেনি ইপিবি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও জুন মাসের রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেনি। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এতদিন ইপিবির সরবরাহ করা তথ্য গ্রহণ করত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইপিবি প্রতি মাসের রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করে থাকে। সাধারণত চলমান মাসের ৩ তারিখের মধ্যে আগের মাসের রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করে সংস্থাটি। কোনো কোনো মাসে ১ তারিখেও আগের মাসের তথ্য প্রকাশ করেছে ইপিবি। কিন্তু জুলাই মাসের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও জুন মাসের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কবে প্রকাশ করা হবে তাও নিশ্চিত করতে পারছে না সংস্থাটি।
এবার রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে এসএমএস করা হলেও তিনি উত্তর দেননি।
তবে ইপিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রপ্তানি তথ্যের গরমিল ধরা পড়ায় ইপিবি তথ্য বাছাই করছে। এজন্য এ মাসে একটু দেরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রপ্তানি আয়ের তথ্যে অসংগতির যে হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে, তা সবই ঠিক আছে। আমাদের দেশ থেকে দুইভাবে পণ্য রপ্তানি হয়। এর একটি হচ্ছে ব্যাংক টু ব্যাংক এলসি। প্রথমে কাপড় ও সুতা আমদানি করা হয়, তারপর রপ্তানি করা হয়। এখানে মোট মূল্য এক্সপোর্ট হিসেবে ধরা হয়। আবার আরেকটি হচ্ছে কাপড় ও সুতা বিনা মূল্যে ক্রেতারা (বায়ার) পাঠিয়ে দেয়। ওই পণ্য যখন রপ্তানি হয়, তখন ক্রেতারা আমাদের শুধু সিএমটি (কাটিং, মেকিং অ্যান্ড ট্রিমিং) পেমেন্ট করে। আমরা (ইপিবি) এতদিন পুরো রপ্তানি মূল্য দেখিয়েছি। আর এনবিআর বায়াররা যে কাপড় ও সুতা পাঠান, তা বাদ দিয়ে রপ্তানির হিসাব করে। সে কারণেই ইপিবি ও এনবিআরের হিসাবে বড় গড়মিল হয়েছে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত ৮ জুলাই ইপিবিতে এ বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। তাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, ইপিবি, বিবিএস, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের (বিএফটিআই) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন অসংগতি এড়াতে সবাই একটি মানদণ্ড ঠিক করে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হন।
সেই মানদণ্ড অনুযায়ী কয়েক দিনের মধ্যেই জুন মাসের রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে গত ৩ জুলাই বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের তথ্য নতুনভাবে প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এতে ওলটপালট হয়ে গেছে সব হিসাব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রকৃত রপ্তানি কত হচ্ছে, সেই তথ্য ব্যবহার করে আর্থিক হিসাব গণনা শুরু হয়েছে। এনবিআর আর ইপিবি একই রকম রপ্তানি তথ্য ব্যবহার করবে। ফলে রপ্তানি তথ্য নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল, তা কেটে যাবে।
জানা যায়, এই বিভ্রান্তি দূর করতে বেশ কিছুদিন ধরে আইএমএফ সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছিল।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিটিএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এখন রপ্তানির যে তথ্য প্রকাশ করছে, এটাই প্রকৃত তথ্য। প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি দেখিয়ে আসছিল ইপিবি। দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়টি আমরা বলে আসছিলাম।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবই যৌক্তিক। সঠিক হিসাব না দেওয়ায় এত দিন নীতিনির্ধারকদের কাছে ভুল বার্তা গেছে। এতে করে পুরো খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।