নারীর প্রতিবাদী আখ্যানময় নাটক ‘মেডিয়া’
Posted: 11 ফেব্রুয়ারী, 2024
একতা প্রতিবেদক :
নির্যাতিত কিংবা হেনস্থা হওয়াই যেন নারীর নিয়তি। ঘরে কিংবা বাইরে প্রতি পদে পদে তাদের শিকার হতে হয় প্রতিবন্ধকতার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারী যেন কেবলই ভোগের বস্তু। কখনো বা জীবনসঙ্গীর অন্যায্য ও অন্যায় আবদারও মেনে নিতে হয় ইচ্ছের বিরুদ্ধে। আর পুরুষতান্ত্রিক সেই নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারীর প্রতিবাদে জ্বলে ওঠার কাহিনী উঠে এসেছে মেডিয়া নামক মঞ্চনাটকে।
নারীর প্রতিবাদী আখ্যানের নাটকটি সম্প্রতি আবারো মঞ্চে এনেছে নাট্যদল ঢাকা থিয়েটার। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির পঞ্চম মঞ্চায়ন হয়। কিংবদন্তি গ্রিক নাট্যকার ইউরিপেডিসের সৃষ্টির নির্যাসে নির্মিত নাটকটি অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম। দলের ৫১তম প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন হুমায়ুন কবীর হিমু।
এক জটিল মনস্তাত্তিক নাটক মেডিয়া। যেখানে পুরুষের যৌন ইচ্ছা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার শিকার মেডিয়া হয়ে উঠেন আপন সন্তানের খুনি। মাতৃসত্তাকে অতিক্রমপূর্বক প্রতিশোধপরায়ণ এক নারীতে রূপান্তিত মেডিয়া চরিত্রে স্বপ্নভঙ্গ, প্রতারিত ও লুণ্ঠিত মানবসত্তার দেখা মেলে। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের লেখা এ নাটকের উপস্থাপনা ঢাকা থিয়েটারের কর্মীরা অভিনয় দক্ষতায় সমকালীন আবহে মেলে ধরেছেন।
নাটকের প্রাসঙ্গিকতা প্রসঙ্গে প্রযোজনাটির অধিকর্তা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন– মা তাদের সন্তানদ্বয়কে হত্যা করার মতো ঘটনা কি আমাদের বর্তমান সময়ের সামাজিকচিত্র বহন করে? সে প্রশ্ন হলো, এখনো প্রায় প্রতি মাসে বাংলাদেশে মা তার সন্তানকে হত্যা করছে এমন ঘটনার সংবাদ পাঠে আমরা শিউরে উঠি, নৃশংসতায় অসহায় বোধ করি।
এসব ঘটনা অসহনীয় কিন্তু বাস্তব। পুরুষের লোভ ও উচ্চাভিলাষ, নারীর সামাজিক অবস্থা, নিপীড়িত ও প্রতারিত হওয়ার চিত্র প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের সঙ্গে কী অদ্ভুতভাবে মিলে যায় দেখে আমরা বিস্মিত হই। মনে হয় এতো নাটক নয়, যেন বা এই তো গত মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বীভৎস ঘটনা প্রত্যক্ষ করলাম। এখানেই নাটকটির প্রাসিঙ্গকতা।
গ্রিক ভাষার খ্যাতিমান ট্র্যাজেডি রচয়িতা ইউরিপেডিস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৮০-৪০৬) জীবদ্দশায় ৯৫টি নাটক রচনা করেছিলেন। প্রভাবশালী এই নাট্যকারের সেরা নাটক বলা হয় ‘মেডিয়া’কে।