‘সর্বেসর্বা’

Posted: 11 ফেব্রুয়ারী, 2024

একতা প্রতিবেদক : একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ এখন মোটামুটি সুনামের ভারে জর্জরিত। বর্তমান সময়ে ক্যাম্পাসে মারপিট, চাঁদাবজি, দাখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি, হয়রানি, হত্যা, হাতুড়িপেটা, যৌন নিপীড়ন– এসব ইভেন্টে ছাত্রলীগের আগে কেউ নেই। তারাই সর্বেসর্বা। (দুষ্ট লোকেরা অবশ্য বলে থাকেন, এসব ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের পরেও কেউ নেই।) তাদের এই সুনামের পালে ‘নতুন পালক’ যোগ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সেখানকার এক ছাত্রলীগ নেতা স্বামীকে হলের মধ্যে আটকে রেখে ক্যাম্পাসের জঙ্গলে নিয়ে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেছেন। এটাকে ‘নতুন পালক’ বলাটা ঠিক হবে না এ কারণে যে, প্রায় আড়াই দশক আগে এই ক্যাম্পাসেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন মানিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করার অভিযোগ উঠেছিল। ফলে এখনকার ধর্ষণের ঘটনাকে যারা ছাত্রলীগের ‘নতুন পালক’ হিসেবে অভিহিত করছেন তারা মূলত ছাত্রলীগের ভালো চান না বা ছাত্রলীগের শত্রু বললেও বেশি বলা হবে না। কারণ, ধর্ষণের ক্ষেত্রে যে ছাত্রলীগের অতীত ইতিহাস আছে সেটিকে তারা মুছে দিতে চান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণকারী ছাত্রলীগের ইতিহাস থেকে যারা ‘সমৃদ্ধ-অতীত’ ইতিহাসকে মুছে দিতে চান তারা যাই হোক, ছাত্রলীগের বন্ধু না। সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যে ছয়জন জড়িত ছিল পুলিশ সবাইকেই গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাতে ছাত্রলীগের ইতিহাসের আরেকটি অধ্যায় পুলিশ সামনে এনেছে। সেটা হচ্ছে, ওই ছাত্রলীগ নেতা তার অন্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে রীতিমত মাদকের বাণিজ্য পরিচালনা করতেন। এটা একটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, অর্থনীতির ঘনীভূত রূপ হচ্ছে রাজনীতি। ফলে ছাত্রলীগ এই জায়গাতেও সকলের পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবে যে, দেশের এই ক্রান্তিকালে, যখন আমাদের অর্থনীতি ধসে পড়ছে তখন ছাত্রলীগ সেটাকে উত্তোলনের জন্য নিজেদের জন্য এক প্রকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা ক্যাম্পাসে শুধু রাজনীতিই করে না, তারা মাদকের বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করার ভূমিকা রাখছে।