ঢাকা ওয়াসার ৩৩২ কোটি টাকা আত্মসাতে ৪৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী

Posted: 26 নভেম্বর, 2023

একতা প্রতিবেদক : ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ৩৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ৪৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সমিতির বিভিন্ন পদে থাকার সময় ওই অর্থ অবৈধভাবে তারা নিজের পকেটে নেন। তাদের মধ্যে একজনই আত্মসাৎ করেন প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। অন্যরা আত্মসাৎ করেন ৪ লাখ থেকে ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত। সমবায় অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সমিতির অর্থ লুটপাটের ঘটনাটি ঘটে। সমবায় অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে কে কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ওই অর্থ সমিতির কোষাগারে জমা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের কয়েকজন এরই মধ্যে মারা গেছেন এবং কয়েকজন চাকরি শেষে চলে গেছেন অবসরে। তবে অন্যরা চাকরি করে যাচ্ছেন। এদিকে, অভিযোগ ওঠার পর তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আসামিরা হলেন, রাজস্ব কর্মকর্তা ও সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মিঞা মো. মিজানুর রহমান, হাবিব উল্লাহ ভূঁইয়া ও কম্পিউটার অপারেটর নাইমুল হাসান। সমিতির অর্থ লুটপাটের অভিযোগ ওঠার পর গত বছরের ৬ জুলাই সমবায় অধিদপ্তর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান করা হয় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মুহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। দুই সদস্য হলেন উপসহকারী নিবন্ধক জহিরুল হক ও পরিদর্শক ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ। ঢাকা ওয়াসা গঠনের পর শুরু থেকে পানির মিটারের রিডিং দেখে বিল করার দায়িত্ব পালন করেন সংস্থাটির মিটার রিডাররা। ১৯৯৭ সালে এই দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী সমবায় সমিতিকে। এ জন্য সমিতি প্রাইভেট পাবলিক ইন্টারেস্ট (পিপিআই) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে চুক্তি করে। শর্ত ছিল, বিল ইস্যু ও আদায়ের সব কাজ তারা করবে। বিনিময়ে ওয়াসায় জমা হওয়া অর্থের ১০ শতাংশ সমিতির তহবিলে জমা হবে। ওই অর্থ থেকে সমিতির জনবলের বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ হবে। উদ্বৃত্ত অর্থের সুবিধাভোগী হবেন সমিতির সাধারণ সদস্যরা। এ প্রক্রিয়ায় ভালোই লাভ করছিল ৩ হাজার ১২ সদস্যের এই সমিতি। কিন্তু পরে ওয়াসা নিজেই আবার এ কাজ করার উদ্যোগ নেয়। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ওয়াসা চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োগ দিয়ে বিলিং কার্যক্রম শুরু করে। ততদিনে কর্মচারী সমিতির তহবিলে মোটা অঙ্কের অর্থ জমা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী সব মিলিয়ে আত্মসাৎ হয়েছে ৩৩২ কোটি ৫২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।