একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বামজোটের হরতাল
Posted: 19 নভেম্বর, 2023
একতা প্রতিবেদক :
নির্বাচন কমিশন কর্র্তৃক একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকে গত ১৬ নভেম্বর দেশব্যাপী সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই বাম জোটের নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাস্তায় পিকেটিং করে। ঢাকায় সকাল থেকে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা, বিজয়নগর, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং হয়। হরতালের পিকেটিং ও মিছিল চলাকালে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার বাহিনী হামলা ও বাধা প্রদান করেছে। এর আগে গত ১৫ নভেম্বর রাতে হরতালের সমর্থনে প্রচার মিছিলে ফেনী ও কিশোরগঞ্জে হামলা করে। বাসদ (মার্কসবাদী) ফেনী জেলার সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন, ছাত্রফ্রন্ট ফেনী জেলার আহবায়ক নয়ন পাশা, নারীমুক্তি কেন্দ্রের সংগঠক রাইহানে কুমুসহ অনেকে মারাত্মকভাবে আহত হন। আজ হরতাল সফল করতে পিকেটিংয়ে নামলে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক, রংপুর জেলা আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়ছে।
হরতাল পরবর্তী সমাপনী সমাবেশ থেকে হরতালসহ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা ও একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণা করা হয়। সমাবেশের সভাপতি বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দেশের প্রায় সকল সক্রিয় বিরোধী দলসহ জনগণের দাবি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে বিরোধী দলের আন্দোলনকে নির্মমভাবে দমন করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি না করে একতরফাভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের পরিবর্তে দেশকে আরো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিল ক্ষমতাসীন সরকার। জনগণের কাছে এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ পূর্বের ন্যায় এবারও একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘একতরফা আরেকটি নির্বাচন দেশকে আরো গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। রাজনৈতিক সংকট দেশের অর্থনৈতিক সংকটকেও আরো ত্বরান্বিত করবে। তাই বিরাজমান সংকট উত্তরণে অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে।’
নেতৃবৃন্দ দাবি আদায়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।