ইউক্রেনে রাশিয়া হারলে পরমাণু
যুদ্ধ : ন্যাটোকে হুঁশিয়ারি
Posted: 22 জানুয়ারী, 2023
একতা বিদেশ ডেস্ক :
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট, ক্রেমলিনপ্রধান ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র দিমিত্রি মেদভেদেভ মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হার পারমাণবিক যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিতে পারে।
‘প্রচলিত যুদ্ধে পারমাণবিক শক্তিধর কারো হার পরমাণু যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিতে পারে,’ টেলিগ্রামে রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
‘পারমাণবিক শক্তিধররা কখনোই তাদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, এমন বড় কোনো যুদ্ধে হারেনি,’ বলেছেন ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা মেদভেদেভ।
ন্যাটো এবং আরও কিছু দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা জার্মানির রামস্টেইন বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনে রাশিয়াকে হারানোর কৌশল ও কিয়েভকে সহায়তার বিষয় নিয়ে যে নীতি ঠিক করবেন, তার ঝুঁকির বিষয়টিও তাদের মাথায় রাখা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন রুশ এ রাজনীতিক।
রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র দুটোই পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশ। এ দুই দেশের কাছেই বিশ্বের পারমাণবিক ওয়ারহেডের ৯০ শতাংশ আছে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হবে কি হবে না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেশদুটির দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
যুদ্ধাস্ত্র ও সেনার সংখ্যায় ন্যাটো রাশিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও সমগ্র ইউরোপের তুলনায় রাশিয়ার একার কাছেই অনেক অনেক বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। যে কারণে পশ্চিমা বিশ্লেষকরা তাদের হুমকিকে সহজে উড়িয়েও দিতে পারেন না।
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার হাতে ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আছে ৫ হাজার ৪২৮টি। এর বাইরে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সাড়ে তিনশ, ফ্রান্সের ২৯০, যুক্তরাজ্যের ২২৫টি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানকে’ আগ্রাসী ও বেপরোয়া পশ্চিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবেই দেখছেন পুতিন। যে কোনো আগ্রাসী শক্তির বিপক্ষে নিজেকে ও জনগণকে রক্ষায় রাশিয়া সম্ভাব্য সব উপায়কে কাজে লাগাবে বলে বারবার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনা ইউক্রেনে প্রবেশ করার পর ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংঘাতের সূচনা হয়; ১৯৬২ সালের ‘কিউবান মিসাইল ক্রাইসিসের’ পর মস্কো ও পশ্চিমা দেশগুলো আর কখনোই এত বৃহৎ পরিসরে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী অবস্থানও নেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানকে সাম্রাজ্যবাদী কায়দায় জমি দখল হিসেবে দেখছে। কিয়েভ বলছে, শেষ রুশ সেনা ইউক্রেন ছাড়ার আগ পর্যন্ত তারা লড়বে।
তার মধ্যেও ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে দেওয়া ভাষণে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোকে রাশিয়ার ‘আসল শত্রু’ অ্যাখ্যা দিয়ে মস্কো যে একবিন্দুও ছাড় দেবে না তার ইঙ্গিত দেন।