মামদানির জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি রাজনীতিকে চাঙা করছে

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা বিদেশ ডেস্ক : নিউইয়র্ক সিটি নিয়ে সাহসী সব পরিকল্পনা রয়েছে ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির। তিনি নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানায় মুদিদোকান চালু, আরও বাড়ি নির্মাণ ও বাসের ভাড়া সম্পূর্ণ মওকুফ করতে চান। আরও চান ভর্তুকিপ্রাপ্ত ভাড়াটেদের জন্য বাড়িভাড়া বৃদ্ধি স্থগিত করতে। নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিকে সামনে রেখে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বীরা ও কিছু গণমাধ্যম ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে তাঁর অবস্থানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। মামদানি ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষায় সরব কণ্ঠস্বর। তিনি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছেন এবং গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা হিসেবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মূল্যায়নের সঙ্গেও একমত পোষণ করেছেন। ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে মামদানির এ অবস্থান নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও নিজের অবস্থান থেকে একচুল পিছু হটেননি তিনি এবং ডেমোক্র্যাট প্রাইমারিতে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়ে অভাবনীয় জয় পেয়েছেন। স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য মামদানি এখন ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী। মামদানির সমর্থকদের মতে, তাঁর এ জয় হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন বাঁকের সূচনা, যা এটিই দেখিয়েছে যে প্রগতিশীল নীতিমালা ও ফিলিস্তিনের অধিকারকে সমর্থন দিয়েও নির্বাচনে সফল হওয়া সম্ভব। প্রগতিশীল সংগঠন জাস্টিস ডেমোক্র্যাটসের মুখপাত্র উসামা আন্দ্রাবি বলেন, ‘এটি একটি বড় ঘটনা। যাঁরা সত্যিকারের প্রগতিশীল এবং ধনকুবের ও করপোরেট অর্থায়নে পরিচালিত রাজনৈতিক প্রচার সংস্থার বিরুদ্ধে শ্রমজীবী শ্রেণিকে একত্র করতে প্রস্তুত, কিন্তু গণহত্যার মতো বড় বিষয় নিয়ে কোনো ছাড় দেন না, তাঁদের সাফল্য কেউ আটকাতে পারবে না।’ ঐতিহ্যগতভাবে নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাটদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে মামদানির নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনে সহজ জয় পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফিলিস্তিন বিষয়ে নিজের অবস্থান থেকে তাঁর (মামদানি) একচুলও পিছু না হটা এক বিরাট বিষয়। তা-ও এমন এক পরিবেশে, যেখানে বলা হতো, এ অবস্থান নেওয়া রাজনীতিতে ব্যর্থতার কারণ হবে। কিন্তু এ আন্দোলন (মামদানির প্রচার) শুধু সেই মতটা জোর দিয়ে বলেইনি, বরং পুরো আন্দোলনই ওই মতের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হিবা গোয়ায়েদ বলেন, অনেক তরুণ জোহরান মামদানির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন এবং ইসরায়েলি নীতির বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের কারণে মূলত তাঁর প্রচারে যুক্ত হয়েছেন। গোয়ায়েদ আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিন বিষয়ে নিজের অবস্থান থেকে তাঁর (মামদানি) একচুলও পিছু না হটা এক বিরাট বিষয়। তা–ও এমন এক পরিবেশে, যেখানে বলা হতো, এ অবস্থান নেওয়া রাজনীতিতে ব্যর্থতার কারণ হবে। কিন্তু এ আন্দোলন (মামদানির প্রচার) শুধু সেই মতটা জোর দিয়ে বলেইনি, বরং পুরো আন্দোলনই ওই মতের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।’ এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘যদি মামদানি সমালোচকদের খুশি করতে নিজের অবস্থান বদলে ফেলতেন, তাহলে যে সমর্থন আর উদ্দীপনা তাঁকে জেতাতে সাহায্য করেছিল, সেটা হারিয়ে ফেলতেন। কিন্তু তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি যে সমর্থন দেখিয়েছেন, তা সম্ভবত তাঁর প্রচারকে আরও শক্তিশালী করেছে।’

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..