শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান

রিফাত আমিন রিয়ন

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণসহ সহিংসতার মতো ঘটনা বেড়েই চলছে। যাদের দ্বারা শিশুরা সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার কথা, তাদের হাতেই বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শিশু প্রতিনিয়ত সহিংসতা, ভৎসনা এবং শোষণের শিকার হয়। ধর্ষণ হলো এমন একটি অপরাধ, যেখানে একজন ব্যক্তি জোরপূর্বক বা অসম্মতিতে অন্য একজন ব্যক্তির সাথে যৌনসঙ্গম করে। এটি শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভাবে অত্যন্ত ভয়াবহ অপরাধ এবং বিশ্বজুড়ে আইনত দণ্ডনীয়। আর শিশু ধর্ষণ হলো, ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুর সঙ্গে জোড়পূর্বক যৌন সঙ্গম বা যৌন কার্যক্রম করা। তথ্যমতে, বাংলাদেশে ১০২টি শিশু আদালত থাকা সত্ত্বেও কিশোর-কিশোরীদের জন্য যে বিচার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে ২৩ হাজারেরও বেশি মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। ইউনিসেফের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ১ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৯০ ভাগ শিশু প্রতি মাসে গৃহে মানসিক বা শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালে মোট ৯৭১ টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে। যার ফলে ৪৪৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে ৭৫ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪৩৯৪ টি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে যার মধ্যে অনেক ভুক্তভোগী শিশু। একই বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২২৪ জন মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যার মধ্যে ৮১ জন হত্যা এবং ১৩৩ জন আত্মহত্যা করেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ৯৯৭৭ টি ধর্ষণ মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। যা দৈনিক গড়ে ১৩ টি নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা নির্দেশ করে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৩৯২ টি ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে, যা পূর্ববর্তী দুই বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের বিভিন্ন যৌন সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে ৬৩ ভাগ ভুক্তভোগী শিশু। যাদের বয়স ৩ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান শিশুদের প্রতি যৌন সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) এবং ইউনিসেফের পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি ৫ জন মেয়েশিশুর মধ্যে ১ জন এবং প্রতি ১৩ জন ছেলে শিশুর মধ্যে ১ জন ১৮ বছর হওয়ার আগেই যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে। চলতি বছরে বাংলাদেশ সরকার ধর্ষণ মমলার তদন্ত ও বিচার পক্রিয়া দ্রুত সম্পর্ণ করার লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়ন করেছে। এই আইনটি ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে কার্যকর করা হয়েছে। নতুন এই অধ্যাদেশে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধর্ষণ মামলার তদন্ত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ও বিচার পক্রিয়া ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করার কথা বলা হয়েছে। এখানে শিশু ধর্ষণ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলো থেকে বোঝা যায় যে, শিশুদের প্রতি যৌন সহিংসতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। ধর্ষণ মামলা তদন্ত ও বিচার নির্ধারিত সময়সীমায় শেষ করতে হবে। দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান কার্যকর করতে হবে। মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতার কথা বাড়াতে হবে। শিশু যেন তার পরিবারের সাথে নিরাপদে কথা বলতে পারে তার সাথে সে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হবে। নির্যাতনের শিকার শিশুকে দোষারোপ না করে তার এবং পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রথম পাতা
বাংলাদেশ এখন কোথায়?
‘ভালোমানুষ’
শ্রমিক হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিন
জুলাইয়ের ৩ দিনে হাজারের বেশি রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে
‘পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখুন’
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সম্বলিত দেয়াল ভেঙে ফেলায় বামপন্থিদের ক্ষোভ
বাংলাদেশে বেড়েছে ধর্ষণ-গণপিটুনিতে হত্যা
ফদলস্ফজ
দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবি চা-শ্রমিকদের
‘মুরাদনগরের ঘটনা প্রমাণ দিচ্ছে সরকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ’
‘২০ বছর লে মজুরির কথাই বলছি’
গণতন্ত্র কায়েমের লড়াইয়ে বাম গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অপরিহার্য
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট নানা কর্মসূচি পালন করবে সিপিবি

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..