অবৈধ মজুতদার-ব্যবসায়ীদের কারণে চালের দাম বাড়ছে
একতা প্রতিবেদক :
হঠাৎ করেই রাজধানীসহ সারা দেশে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতি কেজি চালে দুই থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বোরোর এই ভরা মৌসুমে চালের এই দর বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে ভোক্তারা। কিন্তু কেন বাড়ছে চালের দাম? যেখানে এখনো দেশের হাটবাজারগুলোতে বোরো মৌসুমের কাঁচা ধানের গন্ধই যায়নি। এছাড়া, এবার বোরোর উৎপাদনও ভালো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকারের মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অসাধু মজুতদার ও কর্পোরেট চাল ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণে ধান কিনে মজুত করে রেখেছেন। কৃষকের ধান সাধারণ মিলারদের হাতে একেবারে নেই বললেই চলে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তবে বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাতালে ধান শুকানো যাচ্ছে না। ফলে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণেও চালের দাম বেড়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
খাদ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ (২৪ জুন) তথ্যমতে, সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত আছে ১৭ লাখ ১০ হাজার ৩৩ টন। এর মধ্যে চাল আছে ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৭৬ টন। ধান মজুত ২ লাখ ৭ হাজার ৯৮৩ টন। আর গম আছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯ টন।
গত ২৫ জুন নওগাঁ, দিনাজপুরসহ কয়েকটি স্থানে মিল পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০০ টাকা, যা ২০ দিন আগেও ৩৫০০-৩৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাল ২৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২০০০, যা আগে ১৮০০ টাকা ছিল। বি-আর২৮ জাতের চাল ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকা, যা ১৩ দিন আগেও ২৭০০ টাকা ছিল। এছাড়া মোটা জাতের চালের মধ্যে স্বর্ণা ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৭০০, যা ১৩ দিন আগে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর পাইকারি আড়তে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৩৯০০ টাকা, যা ২০ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩৬০০ টাকা। ২৫ কেজি বস্তার নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ২১৫০, যা আগে ১৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ কেজির বস্তা বিআর২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ২৯৫০, যা ১৭ দিন আগেও ২৭৫০ টাকা ছিল। এছাড়া স্বর্ণা জাতের মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৭৫০, যা আগে ২৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে যমুনা সেমি অটো রাইচ মিলের মালিক আইয়ুব আলী জানান, বর্তমানে বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাতালে ধান শুকানো যাচ্ছে না। এ কারণে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া বড় বড় করপোরেট কোম্পানি এসিআই, রূপচাঁদা, আকিজ, প্রাণ, স্বপ্নসহ এসব কোম্পানির প্রতিনিধিরা এই মোকাম থেকে পর্যাপ্ত চাল কিনে তাদের গোদামগুলোতে মজুত শুরু করেছে। পাশাপাশি একশ্রেণির স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও চাল কিনে মজুত করছে। ফলে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।
নওগাঁ সূত্রে জানা যায়, দেশের ধান-চাল উৎপাদনকারী অন্যতম এ জেলা নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি দুই থেকে সাত টাকা। পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে দুই-চার টাকা। ভরা মৌসুমেও চালের এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছে নিম্ন-আয়ের মানুষ।
ভরা মৌসুমে মিলারদের সিন্ডিকেট এবং মজুতবিরোধী অভিযান না থাকায় চালের এমন আকস্মিক দাম বৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা।
বড় বড় ব্যবসায়ীরা বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছে। তারা হাজার হাজার টন ধান কিনে মজুত করে রাখছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করার জোর দাবি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-দোকানিদের।
চালের আকস্মিক দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে নওগাঁর আড়তদার পট্টির সততা রাইস এজেন্সির পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সুকুমার ব্রহ্ম বলেন, সরকারের মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা করছেন না অসাধু মজুতদাররা। এবার বোরো মৌসুমের শুরুতেই করপোরেট ব্যবসায়ীরা হাট-বাজারে আসা অর্ধেকের বেশি ধান কিনে মজুত করে রেখেছেন। কৃষকের ধান সাধারণ মিলারদের হাতে একেবারে নেই বললেই চলে।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতে বলেন, চালের দাম কী কারণে বেড়েছে-তা জানতে খাদ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে কেউ চালের দাম বাড়ালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রথম পাতা
সময় এসেছে অধিকার আদায়ে নিজেই রাজনৈতিক সংগ্রামে সংগঠিত হওয়ার
সিলেটে গ্রেপ্তার সব নেতাকর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি
রেশনের দাবিতে ক্ষেতমজুর সমিতির সভা-সমাবেশ
‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে’
দেশে নতুন ফ্যাসিবাদ কায়েম হচ্ছে : উদীচী
ন্যায্য শ্রমিক আন্দোলন দমনে গণগ্রেপ্তারের জবাব দেওয়া হবে
জাহানারার অভিযোগে কাঠগড়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেট
এই মুহূর্তে দরকার বাম ধারার সরকার
Login to comment..








প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন