সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবি

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
বগুড়া সংবাদদাতা : সমতলের আদিবাসীরা নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিস্পেষিত। ভূমি দখলদাররা আদিবাসীদের জোরপূর্বক জমি-জমা বসতভিটা দখল করছে। মুল স্রোতধারা থেকে বিছিন্ন করা হয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে বৈষম্য কমিয়ে আদিবাসীদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন না থাকায় ভূমি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে। অবিলম্বে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনসহ ভূমিহীন আদিবাসীদের খাসজমি বন্দোবস্ত দেওয়া জোর দাবী জানানো হয়। গত ২৬ এপ্রিল বগুড়ার সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন বগুড়া জেলা কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আদিবাসী নেতা শ্রীকান্ত মাহাতোর সভাপতিত্বে ও অখিল পালের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা ডাক্তার দিবালোক সিংহ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। আরও বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা অ্যাডেভোকেট মহসিন রেজা, আসলাম খান, সিপিবি নেতা আমিনুল ফরিদ, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা হরি শংকর সাহা, অমর মাহাতো প্রমুখ। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন, আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেন। সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানে আদিবাসীরা স্বত:স্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। যে কোনো অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী জনগণের মধ্যে একেবারে পিছিয়ে থাকা চেতনার ব্যক্তি বর্গসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সামিল হয়। আদিবাসীরা রুখে দাঁড়িয়েছে সরকারির সমর্থন পুষ্ট দূর্বত্তদের বিরুদ্ধে, যারা আদিবাসীদের বসত-ভিটা, জমি-জমা, ফসল, পুকুর দখল করেছে। বর্তমানে আদিবাসীদের অধিকার ও দাবী পুরণ হয়নি। অন্তবর্তী সরকারের কাছে আদিবাসীদের দাবিসমূহ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের আদিবাসীরা সমতল ও পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করেন। তাদের রয়েছে ৪৪ টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী ও ৩৪ টি বিভিন্ন ভাষা সহ নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি আচার ব্যবহার, পোশাক পরিচ্ছন্ন ও ধর্মীয় বিশ্বাস। আদিবাসীদের সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও রাজনীতি রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্মেলনে, বগুড়ার শেরপুরে আদিবাসীদের জমি-জমা, বসত-ভিটা থেকে উচ্ছেদ, গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মে আদিবাসীদের উচ্ছেদের যড়যন্ত্র চলছে। যড়যন্ত্র মোকাবেলায় আদিবাসীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত, দমনপীড়ন বন্ধ, স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু, আদিভিটায় পুনর্বাসিত করা সহ ১৫ দফা দাবি আদায়ে আদিবাসীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সম্মেলনে জাতীয় পতাকা, সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, নৃত্য পরিবেশন করা হয়। সম্মেলনে শেষে একটি সু-সজ্জিত র্যা লি বগুড়া শহর প্রদক্ষিণ করে। সম্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে শ্রীকান্ত মাহাতোকে সভাপতি ও অমল মাহাতোকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট বগুড়া জেলা কমিটি গঠন করা হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..