একতা ডেস্ক : কন্যাভ্রূণ হত্যার কথা প্রায়ই শোনা যায়। পুত্রসন্তানের জন্ম না দেওয়ায় নারীর উপর নির্যাতনের খবরও মিডিয়ায় আসে। কিন্তু, বিজ্ঞান বলছে, সন্তানপুত্র না কন্যা হবে, তা নির্ভর করে তার পিতার ক্রোমোজোমোর উপর। পুরুষের ণ ক্রোমোজোমের সাহায্যেই একজন নারী পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে পারেন। কিন্তু, সেই ণ ক্রোমোজোমই যদি ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়? তাহলে কি আর পৃথিবীতে পুরুষের অস্তিত্ব থাকবে? এক গবেষণায় ণ ক্রোমোজোম নিয়ে এমনই আশঙ্কার কথা শোনালেন গবেষকরা। মানুষের দেহে প্রতি কোষে একজোড়া সেক্স ক্রোমোজোম থাকে। নারীর দেহে দুটোই এক্স ক্রোমোজোম। আর পুরুষের দেহে একটি ঢ ও অপরটি ণ ক্রোমোজোম। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, যে ডিম্বাণুর নিষেক ঘটে, সেটি ঢ ক্রোমোজোম বহনকারী না ণ ক্রোমোজোম বহনকারী শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হচ্ছে, তার উপরই নির্ভর করে মেয়ে না ছেলে হবে। প্রসেডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ণ ক্রোমোজোমের সংকোচন নিয়ে। বছর দুয়েক আগের ওই গবেষণাপত্র বলছে, মানুষের ণ ক্রোমোজোম ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হতে হতে একসময় হারিয়ে যেতে পারে ণ ক্রোমোজোম। প্রফেসর জেনি গ্রেভস বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার স্তন্যপায়ী প্রাণী প্লাটিপাসকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ঢণ একটি সাধারণ জোড় ক্রোমোজোম। যাতে সমান জিন রয়েছে। এখন মানুষের ঢ ক্রোমোজোমে প্রায় ৯০০টি জিন রয়েছে। আর ণ-তে ৫৫টি জিন ও প্রচুর নন-কোডিং ডিএনএ রয়েছে। যার অর্থ, বিগত ১৬৬ মিলিয়ন বছরে ণ ক্রোমোজমের বাকি জিনগুলি নষ্ট হয়েছে। প্রতি মিলিয়ন (১০ লক্ষ) বছরে প্রায় ৫টি জিন নষ্ট হয়েছে। এইভাবে চলতে থাকলে শেষ ৫৫টি জিন ১১ মিলিয়ন (১১০ লক্ষ) বছরে শেষ হয়ে যাবে। তখন পৃথিবীতে হয়তো শুধু কন্যাসন্তানের জন্ম হবে। তবে নতুন আশার আলো দেখালেন প্রফেসর গ্রেভস। তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তখন নতুন লিঙ্গ নির্ধারণ জিন উদ্ভাবন হতে পারে। তবে বিষয়টি ততটা সহজ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। নতুন লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিনের বিবর্তনের সঙ্গে ঝুঁকিও আসে। যদি পৃথিবীর ভিন্ন প্রান্তে আলাদা আলাদা বিবর্তন হয়, তখন কী হবে? নিজেই প্রশ্ন তুললেন প্রফেসর গ্রেভস। ফলে আজ থেকে ১১০ লক্ষ বছর পর, পৃথিবীতে কেউ যদি আসেন, হয়তো মানুষের চিহ্ন খুঁজে পাবেন না। কিংবা ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মানুষ দেখতে পাবেন।