কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ

ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালু করতে হবে

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

দেশব্যাপী ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
একতা প্রতিবেদক : প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টন ধান ক্রয়, ভূমিহীন কৃষকসহ প্রকৃত কৃষকদের কৃষি কার্ড দাও বিতরণ, ধানসহ ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করা, সিন্ডিকেট ভেঙে কৃষক সমবায় বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, পল্লী রেশন ও শস্য বীমা চালু, চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের (সি আই পি) অভ্যন্তরে বোরো মৌসুমে সেচ সংকট ও আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূর করার দাবিতে ২৬ এপ্রিল ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সমন্বয়ক ও কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি অ্যাভোকেট এস এম এ সবুর, জাতীয় কৃষক ও ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সভাপতি বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল্লাহ মুছা, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন দুলাল, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা রাজু আহমেদ। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে বোরো ধানের ভরা মৌসুম চলছে। প্রতিবছরের মতো এবারও সরকার ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার বোরো ধান উৎপাদন খরচ বিগত বছরগুলোর চেয়ে বৃদ্ধি পেলেও এ বছর কেজি প্রতি মাত্র ৪ টাকা বৃদ্ধি করে ৩৬ টাকা কেজি দরে সাড়ে ৩ লক্ষ টন ধান, ৪৯ টাকা কেজি দরে ১৪ লক্ষ টন সেদ্ধ চাল, সেই সাথে ৩৬ টাকা কেজি ধরে গম ক্রয়ের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে ২৪ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্যমতে, ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টন। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা হেক্টরপ্রতি ৪ দশমিক ৪৬ টন। ফলন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পায় কৃষকের ফসল উৎপাদনের খরচ। বর্ধিত দামে সার, বীজ, সেচ, কীটনাশক,

ধান কাটা, মাড়াই শেষে বাড়ির উঠোন পর্যন্ত নিতে বা বাজারে বিক্রি করে যে দাম পায় তাতে কৃষকের ত্রাহী অবস্থা। উৎপাদন খরচ আর বিক্রির সাথে কোন হিসাব মিলাতে পারে না। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কৃষকের আকাঙ্ক্ষা ছিল, চলতি মৌসুমে বোরো ধান বিগত সময়গুলোর চেয়ে বেশি পরিমাণে ক্রয় করবে। দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের দাবি ছিল- মোট উৎপাদনের ন্যূনতম ২০ লক্ষ টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করবে। কিন্তু সরকারের মাত্র সাড়ে ৩ লক্ষ টন ধান আর ১৪ লক্ষ টন চাল ক্রয়ের ঘোষণা কৃষকদের চরমভাবে হতাশ করেছে। গতবছর ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লক্ষ টন। অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করলেও দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির উপর টিকিয়ে রাখার মূল শক্তি এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রমজীবী কৃষক মানুষ। কৃষকদের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ‘কৃষি সংস্কার কমিশন’ গঠন করা জরুরি ছিলো। কিন্তু শ্রমজীবী কৃষকের ফসল উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থার সংস্কার বা বৈষম্য নিরসনের দিকে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। রংপুর : হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে লাভজনক দামে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টন ক্রয়, উন্নয়ন বাজেটের ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দ, ক্ষেতমজুরদের সারাবছর কাজের নিশ্চয়তার দাবিতে কৃষক ও ক্ষেতজুর সংগ্রাম পরিষদ রংপুরের উদ্যোগে মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত। গত ২৯ এপ্রিল ১১ টার দিকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে কাচারীবাজারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি রংপুর জেলার সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ রাজনীতিক শাহাদাত হোসেন, সমাজতান্ত্রিক কৃষক ও ক্ষেতমজুর ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু, কৃষক সমিতির রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, কৃষক ফ্রন্টের রপুর জেলার সদস্যসচিব মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..