রাজধানীতে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটি আয়োজিত ধর্ষণ ও নিপীড়ন প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ এন রাশেদাএকতা প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ধর্ষণ ও নিপীড়ন প্রতিরোধ সমাবেশ থেকে ‘নারীর জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মানের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।’
সমাবেশে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার নারী বিদ্বেষ ও অব্যাহত সহিংসতা-সন্ত্রাস সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে পাড়া-মহল্লায় ‘রোকেয়া ব্রিগেড’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।
গত ১৪ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর পুরানা পল্টন মোড় সংলগ্ন লিংক রোডে ধর্ষণ ও নিপীড়ন প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জামান হীরার সভাপতিত্বে ও সিপিবি নেতা মোরসালিনা অনিকার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ত্রিদিব সাহা, জেলা কমিটির সদস্য মনিষা মজুমদার, নারী শাখার নেতা দীপ্তি সিকদার, মমতা চক্রবর্তী, ট্যানারী শ্রমিকনেতা পিয়া আক্তার প্রমুখ।
সমাবেশে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য এএন রাশেদা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারে যারা দায়িত্ব নিয়েছেন মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাদেরই নিতে হবে। বিভিন্ন নারী বিদ্বেষী বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যারা সমাজকে উত্তপ্ত ও অনিরাপদ করে তুলেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সরকার যে ব্যর্ততার পরিচয় দিয়েছে তা কোন যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি সমাজে বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, জুলাইয়ের গণআন্দোলন চলাকালীন সময়ে নারীরা হাজার মানুষের ভিড়ে রাজপথে গুলির মুখে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছে, জীবন দিয়েছে। বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, গণআন্দোলনের দিনগুলোতে নারীদের লক্ষ মানুষের ভিড়েও নিপীড়নের ভয়ে ভীত হতে হয়নি। নারী বিদ্বেষী কটাক্ষ ও সহিংসতার শিকার হতে হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে এমন ভয়াবহ নিরাপত্তাহীনতার বোধ কেন সৃষ্টি হলো। নারী-শিশু ধর্ষণ, নিপীড়ন, সহিংসতার শিকার হওয়ার মত ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলার কারণ হিসেবে তিনি তনু, মুনিয়া, নুসরাত হত্যাকাণ্ডসহ বিগত সময়ের হত্যা-ধর্ষণের ঘটনাবলীর বিচার করতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততাকে দায়ি করেন। তিনি বলেন, নতুন দল গঠনে সরকারের যতটা মনোযোগ, তার সামান্য মনোযোগও আইন-শৃঙ্খলা ও বিচার ব্যবস্থা পুনর্গঠনে দেখা যায়নি।