
একতা ডেস্ক :
মেক্সিকো বা রাশিয়ার মতন সামন্ততান্ত্রিক সমাজ হোক বা ভারত এবং আফ্রিকা মহাদেশের মতন উপনিবেশ হোক, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের পড়াশুনোর অভ্যাস তৈরি হওয়ার সুযোগ ছিল না। যখন এইসব দেশে সাম্যবাদী আন্দোলন গড়ে উঠল এবং তাদের গণসংঠন ও শ্রমিক-কৃষকদের ট্রেড ইউনিয়নগুলি নিজেদের দলিল-ইশতেহার গোপনে প্রচার করতে শুরু করল। সাধারণ মানুষ প্রথমবার একধরনের পড়াশুনোর স্বাদ পেলেন। অধিকাংশ সময়ে লেখাপড়া জানা সংগঠকরা এইসব প্রচার-পুস্তিকা সাধারণ সদস্যদের পড়ে শোনাতেন। কিন্তু এই পাঠচক্রগুলিকে গোড়ারদিকের প্রাথমিক সাক্ষরতার স্কুল বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।
মেক্সিকোর পড়া শুরু
১৯১০ সালে যখন মেক্সিকোতে বিপ্লব সংগঠিত হয়, তখন ১.৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার মাত্র ২২% স্বাক্ষর ছিল। এরপরের একদশক জুড়ে মেক্সিকোতে অস্থিরতা বজায় ছিল। আলভারো এবারেগন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে কিছু কিছু সংস্কারের কাজ শুরু করেন। এরমধ্যে অন্যতম ছিল গণ-সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, যেমন গ্রামে প্রাথমিক স্কুল খোলা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, জনসাধারণের জন্যে পাঠাগার এবং শিল্পকলার স্কুল তৈরি, প্রাথমিক পড়ুয়াদের জন্য বই পুস্তক ছাপানো। ১৯২১ সালে হোসে ভাসকনসেলস গণশিক্ষার প্রথম সম্পাদকের সরকারি দায়িত্ব পান। এবারেগন তাকে সরাসরি মেক্সিকোর সংস্কৃতিকে গণতান্ত্রিক রূপ দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
মেক্সিকোর সরকার এই কাজের জন্য হাজারের সংখ্যায় গ্রামীণ স্কুল এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলে। শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দিন প্রতি এক থেকে তিন পেসোস করে দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে চালাবার জন্য ভাসকনসেলস কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য এলেনা তোরেস সিউল্লার দ্বারস্থ হন। এলেনা এই সাংস্কৃতিক কর্মসূচিকে পুরো দেশেই বিস্তারিত করে একদশকের মধ্যে প্রায় চার হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেন। তিনি ১৯২১ সালে সমস্ত স্কুলে বিনামূল্যের প্রাতরাশের ব্যবস্থা করেন যাতে বড়ো অংশের শিশুরা খেতে পারে।
ভাসকোনসেলোর নেতৃত্বে জনশিক্ষা মন্ত্রিত্ব (সেক্রেটারিয়া দে এডুকেসিওন পাবলিকা বা এস.ই.পি.) গ্রামীণ এলাকায় গ্রন্থাগারের গুণগত মান বাড়াবার জন্য গুরুত্ব দেয়। এই উদ্দেশ্যে এস.ই.পি. গ্রন্থাগারগুলোর জন্য যেমন আর্থিক অনুদান দিত তেমনই বইও ছাপানো হত; গ্রামীণ পাঠাগারগুলোর জন্য পঞ্চাশ আর শহর এলাকার জন্য হাজার হাজার বই ছাপানো হত। ধ্রুপদী গ্রীক সাহিত্য, মেক্সিকোর ইতিহাস, পারিবারিক প্রশিক্ষণ, কৃষির জন্য উপযোগী সব ধরনের বই থাকত জনসাধারণের সাংস্কৃতিক চেতনা বিকাশের এবং ব্যবহারিক জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য। এস.ই.পি. শিক্ষকদের উপযোগী ম্যাগাজিন এল মায়েস্ট্রো প্রকাশ করত, যাতে প্রশিক্ষণের ধরন, শিক্ষা সংক্রান্ত নতুন ধারণা, বইয়ের রিভিউ ইত্যাদি থাকত।
এই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি, ১৯৩৪ সালে সমাজবিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কোসিও ভিলেগাস তৎকালীন জাতীয় অর্থনীতি স্কুলে (যা বর্তমানে মেক্সিকোর জাতীয় স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি স্কুল) অর্থনৈতিক সংস্কৃতি তহবিল প্রতিষ্ঠা করেন, প্রথমে অর্থনীতি ছাত্রদের মধ্যে বই বিতরণের জন্য এবং পরবর্তীতে এটি লাতিন আমেরিকা জুড়ে বই বিতরণের একটি মাধ্যম হয়ে ওঠে।
মেক্সিকান বিপ্লব প্রাতিষ্ঠানিক আকার নেওয়ার পর এবং এর শ্রেণিগত চরিত্র পরিবর্তিত হতে শুরু করার পর, সংস্কৃতির গণতন্ত্রীকরণে মনোযোগ কমে যায়। সাক্ষরতার হার বাড়লেও, তা ৭০%-এর আশেপাশে থেমে গিয়েছিল, এবং রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থা এবং পাবলিক লাইব্রেরি সিস্টেমগুলি সাক্ষরতার গুণগত মান উন্নত করতে সক্ষম হয়নি। স্কুল এবং লাইব্রেরিগুলোর তহবিল কমে যায়, কারণ অর্থনৈতিক চাপের মুখে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি দায়বদ্ধতা কমে যায়, যা ১৯৮২ সালে মেক্সিকান ঋণ সংকটের মধ্যে চূড়ান্ত হয়। মেক্সিকোর নীতি নির্ধারকরা যখন নব-উদারনীতির কাছে নতি শিকার করেন, তখন সমাজের অন্য প্রবাহগুলো সাক্ষরতার উপর গুরুত্ব বজায় রাখার জন্য সংগ্রাম করেছিল।
১৯৮৬ সালে, লাইব্রেরির সাধারণ পরিচালনায় ‘মাই সামার ভ্যাকেশন ইন দ্য লাইব্রেরি’ (Mis Vacaciones en la Biblioteca) নামে একটি প্রোগ্রাম শুরু হয়, যার মাধ্যমে এক মিলিয়ন শিশু এবং কিশোর পাবলিক লাইব্রেরি পরিদর্শন করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। মেক্সিকোর লাইব্রেরি ব্যবস্থা এই প্রোগ্রামটির উপর ভিত্তি করে সাংস্কৃতিক, সংগীত, এবং কাহিনী শোনানোর উৎসব আয়োজন করে। ১৯৯৫ সালে, ১৯৯৩ সালের পাঠ্যক্রম অনুসরণে শিক্ষা সংস্কারের উদ্দেশ্যে, SEP ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর রিডিং’ (Programa Nacional para la Lectura) তৈরি করে, যা ২০০০ সালে ‘পাঠকদের একটি দেশের দিকে’ (Hacia un país de lectores) বলে নতুন নামকরণ করা হয়। কর্মসূচিটির একটি মূল স্তম্ভ ছিল দেশের বিভিন্ন স্কুল লাইব্রেরির জন্য প্রতি বছর ৭৫টি বই নির্বাচন, উৎপাদন এবং বিতরণ।
২০০৮ সালে, মেক্সিকোর বই এবং পাঠ প্রসারের জাতীয় কর্মসূচি (Programa de Fomento para el Libro y la Lectura) ‘মেক্সিকো লি’ (México Lee) প্রকল্পটি নেওয়া হয়, যা সাক্ষরতাকে সামাজিক অসমতা কমানোর এবং জ্ঞানপ্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধি করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এই কর্মসূচিটি মেক্সিকোর নিজস্ব সাক্ষরতা প্রচারের ইতিহাস এবং কিউবা বিপ্লবের Yo, sí puedo (হ্যাঁ, আমি পারি) প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতা পাঠ্যক্রমের ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। যা ২০০১ সালে তৈরি করা হয় (কিউবার ১৯৬১ সালের সাক্ষরতা প্রোগ্রাম থেকে অনুপ্রাণিত), এবং লাতিন আমেরিকা জুড়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে। পরবর্তী বছরে, ২০০৯ সালে, অর্থনৈতিক সংস্কৃতি তহবিলের (Fondo de Cultura Económica) পরিচালক প্যাকো ইগনাসিও তাইবোও এবং লেখক পালোমা সাইজ তেজেরো ‘ব্রিগেড টু রিড ইন ফ্রিডম’ (Brigada para Leer en Libertad) প্রতিষ্ঠা করেন, যাতে বইগুলি প্রকাশ করা হত, যা জনসাধারণ ফ্রি ডাউনলোড করতে পারত অথবা বইমেলা এবং সাংস্কৃতিক উৎসব থেকেও সংগ্রহ করতে পরতো। ব্রিগেডটির কেন্দ্রবিন্দু হল পাঠের আনন্দ।
পড়াশুনো চীনের মানুষের লড়াইয়ের হাতিয়ার
১৯১১ সালে কুইং রাজবংশের পতনের আগে, জনসংখ্যার অধিকাংশ বিশেষত মহিলাদের মধ্যে সাক্ষরতার অভাব ছিল, এবং শতাব্দীর গোড়ার দিকে সাক্ষরতার হার আনুমানিক ১০-১৫% ছিল। এর পরবর্তী বছরগুলোতে সাক্ষরতা বিশেষভাবে উন্নতি করেনি, প্রধানত চীনের সমাজে যে বিপর্যয় ঘটেছিল, তা ১৯৪৯ সালের চীনা বিপ্লব পর্যন্ত চলতে থাকে। শুধুমাত্র ১৯৫০-এর দশকে সাক্ষরতার হার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, ১৯৫৯ সালের মধ্যে এটি ৫৭% এ পৌঁছায়।
২০২১ সালে, চীনে প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার হার ৯৭% এ পৌঁছে যায়, যা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ হার। গত সাত দশকে চীন যে বিশাল উন্নতি করেছে, তা ‘মানব ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রচেষ্টা’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
এই সাফল্যগুলি ১৯৪৯ সালের বিপ্লবের পরপরই চীন কমিউনিস্ট পার্টি দ্বারা বাস্তবায়িত উদ্যোগগুলির ফলস্বরূপ হয়েছিল। এই উদ্যোগগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-মধ্য চীনে যথাক্রমে জিয়াংসি সোভিয়েত (১৯৩১-১৯৩৪) এবং ইয়ান’অন সোভিয়েত (১৯৩৬-১৯৪৮) এর মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে হয়ে উঠেছিল, যা বিভিন্ন ধরনের সাক্ষরতা প্রচার উদ্যোগকে মাথায় রেখে করা হলেও গ্রামীণ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতাকে প্রাথমিক লক্ষ্য করেছিল। উভয়ই সোভিয়েত ইউনিয়নের সাক্ষরতা প্রচেষ্টার উপর ভিত্তি করে ছিল, যেমন সাক্ষরতা নির্মূল প্রচারণা ‘লিকবেজ’, যা সমস্ত সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য নিয়ে আসে যখন প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার অভিজ্ঞতাকে সংগঠিতভাবে কার্যকর করা শুরু হয়।
১৯২১ সালে, ভি.আই. লেনিন অর্থনৈতিক নীতির উপর একটি সম্মেলনে ঘোষণা করেন যে, ‘যদি নিরক্ষরতাকে নির্মূল না-করা যায়, তবে কোনও অগ্রগতি সম্ভব হবে না।’ সাক্ষরতা ছাড়া, লেনিন বলেছিলেন, ‘রাজনীতি থাকতে পারে না; তা ছাড়া থাকে গুজব, কথা-কাহিনী, রূপকথা এবং কুসংস্কার, কিন্তু রাজনীতি না’।
নতুন চীনের সাক্ষরতা প্রচার কর্মসূচির গঠনকারী সমস্ত কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ করা অসম্ভব হলেও, তিনটি কার্যক্রমের উপর জোর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ:
১. ‘টেক্সট ব্লাইন্ড’, যা ইঙ্গিত দেয় যে, চৈনিক অক্ষর জানার ঐতিহাসিক কেন্দ্রিকতার গুরুত্ব, যাতে একজনকে সাক্ষর হিসেবে বিবেচিত করা যায়। তবে চৈনিক ভাষার ১০০,০০০ এরও বেশি অক্ষর সমাজে পূর্ণ সাক্ষরতা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করেছিল। ১৯৫৫ সালে, বিপ্লবী সরকার চৈনিক লিখিত ভাষার সংস্কারের জন্য একটি কমিটি গঠন করে, যাতে সাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য একটি ব্যবহারিক পদ্ধতি তৈরি করা যায়, যেমন গ্রামীণ বাসিন্দাদের জন্য ১,৫০০টি অক্ষর এবং গ্রামীণ নেতৃবৃন্দ ও শহুরে বাসিন্দাদের জন্য ২,০০০টি অক্ষরজ্ঞান সাক্ষরতার ন্যূনতম প্রয়োজনীয় মানদণ্ড হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ১৯৫৮ সালে, প্রাথমিক স্কুলগুলো পিনইন (চৈনিক অক্ষরের মান্য রোমানিকরণ) এবং সরলীকৃত চৈনিক অক্ষর ব্যবহার করা শুরু করে।
২. মেক্সিকো এবং রাশিয়ার মতো, চৈনিক বিপ্লবও গ্রামীণ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়: যদি অভিভাবকরা পাঠ এবং লেখার গুরুত্বে বিশ্বাসী না-হন, তবে তাদের সন্তানদের মধ্যে পাঠের আনন্দ সৃষ্টি হবে না। লিন হানডা, যিনি চীনের সাক্ষরতা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন, ১৯৫৫ সালে বলেছিলেন যে অক্ষরজ্ঞান এই কর্মসূচির একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত কৃষকদের জীবন সমৃদ্ধ করা এবং তাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা। পরবর্তী বছরগুলিতে জারি হওয়া নিরক্ষরতা-বিরোধী নীতিমালা অনুযায়ী গ্রামীণ প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতা ‘প্রতিবেদনিকতা একত্রিত করা’ (lianxi shiji) এবং ‘প্রয়োগের উদ্দেশ্যে শিক্ষা’ (xue yi yhi yong) এর নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে।
৩. অবশেষে, চৈনিক বিপ্লব তার সাক্ষরতা কর্মসূচিতে পাবলিক লাইব্রেরির ভূমিকা তুলে ধরেছিল। ১৯৪৯ সালে, চীনে শুধুমাত্র পঁইত্রিশটি পাবলিক লাইব্রেরি ছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, নতুন চীন গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষকদের জন্য এবং কারখানার কর্মীদের জন্য গ্রন্থাগার তৈরির চেষ্টা হয়েছে। ১৯৫৬ সাল নাগাদ, চীন ১৮২,৯৬০টি গ্রামীণ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছিল, যেখানে বিভিন্ন ধরনের বইপত্র রাখা হত।
২০২২ সালে শাংহাই লাইব্রেরি (ইস্ট ব্রাঞ্চ) সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়। পুদং জেলার সেন্টুরি পার্কের রাস্তায়, লাইব্রেরিটি প্রতিদিনই কার্যকলাপ মুখর থাকে, তবে বিশেষভাবে রবিবার সন্ধ্যাগুলিতে। বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলের অনেক দরিদ্র দেশে, এই সময়ে রাস্তায় খেলতে থাকা শিশুদের দেখা খুবই সাধারণ একটি দৃশ্য। উত্তরের দেশগুলিতে সম্ভবত শিশুরা ঘরের মধ্যে থাকবে, কিন্তু তাদের চোখ স্ক্রীনের পিক্সেলে আটকে থাকবে। শাংহাইয়ে, শিশুরা বইয়ের স্তূপ সংগ্রহ করে, কখনও বাবা-মা বা দাদু-দিদার কোলে বসে, এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় উত্তেজিতভাবে উল্টোয়।
লাইব্রেরির একটি ছোটো, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ মার্কসবাদী সাহিত্যকে উৎসর্গিত শেলফগুলোকে কালানুক্রমিকভাবে সাজানো: কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস, মাও জেদং, দেং শিয়াওপিং, শি জিনপিং লাইব্রেরির সবচেয়ে স্মরণীয় অংশ হল শিশুদের বিভাগ, যেখানে রঙিন বইয়ের সারি সাজানো, সোফা, টেবিল এবং বুথ রয়েছে আপনার বসে বই পড়ার অপেক্ষায়। এখানেই মানুষ- প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুরা তাদের পড়ার অধিকার (যা ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সর্বজনীন ঘোষণা পত্রের ২৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত) চর্চা করতে আসে। এই জীবনচর্যায়, পড়া স্পষ্টভাবে একটি সামাজিক কার্যকলাপ যা বিশেষত তরুণদের মধ্যে সহানুভূতি এবং জ্ঞানগত সক্ষমতা বিকাশে সাহায্য করে, এবং মানুষকে তাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা এবং পূর্বপুরুষদের সাথে সংযুক্ত করে।