মার্চ মাসেও শিক্ষার্থীদের হাতে নেই সব বই
একতা প্রতিবেদক :
যেখানে পহেলা জানুয়ারি হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক থাকার কথা সেখানে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পার হয়ে চলছে মার্চ মাস, কিন্তু শিক্ষার্থীদের হাতে নেই সব বই। বছরের তৃতীয় মাসে পা দিলেও এখনও অনেক শিক্ষার্থী পায়নি পুরো সেট বই। কেউ পেয়েছে দু-একটি বই, আবার কেউ পেয়েছে তিনটি। ফুল সেট বই না পাওয়ার সংখ্যাই বেশি। সব বই হাতে না পাওয়ায় শিক্ষকরা জোড়াতালি দিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের (রুটিন অনুযায়ী) নিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনার গ্যাপ পড়ে গেছে।
বছরের তৃতীয় মাস শুরু হলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৬ কোটি ৩৮ লাখের বেশি বই উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহই করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এর মধ্যে মাধ্যমিকের বই ৬ কোটি ২২ লাখের মতো।
প্রাথমিকের মোট পাঠ্যবই ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজারের মতো। এর মধ্যে ৯ কোটি ৩ লাখ ৪৪ হাজারের মতো বই সরবরাহের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এখনো ১৬ লাখের মতো বই সরবরাহ হয়নি।
অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বলেছিলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থী সব বই পাবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই দিতে কমপক্ষে মার্চের পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। বই পেতে যতই দেরি হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতিও ততই বাড়ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, বাঁধাই মেশিনের সংকট ও শ্রমিকদের নোট-গাইড বাঁধাইয়ের কাজে বেশি মনোযোগী হওয়ায় পাঠ্যবই বিতরণে দেরি হচ্ছে। তবে মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কিছু বইয়ের টেন্ডারে বিলম্ব এবং কাগজ হাতে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় ছাপার কাজ এখনো শেষ হয়নি।
এনসিটিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন দেরির কারণ হলো কাগজের সংকট। মুদ্রণকারীরা চীন থেকে আট হাজার টন কাগজের বুকিং দিয়েছেন। কিন্তু এখনো সব কাগজ পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে দুই হাজার টন কাগজ পাওয়া গেছে। আর দুই হাজার টন আজ-কালের মধ্যে পাওয়া যাবে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব বই না পৌঁছার কারণে বেশকিছু বিষয়ে এখনো পড়ালেখা শুরু করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এতে শ্রেণিভিত্তিক মূল্যায়নে জটিলতার পাশাপাশি শিখন ঘাটতিসহ নানাভবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।
গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, সিলেটের কাকরদিয়া তেরাদল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনও পর্যন্ত পেয়েছে শুধু বাংলা ও ইংরেজি বই। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেছে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই।
এক শিক্ষার্থী জানায়, মোবাইল বা ল্যাপটপে পিডিএফ পড়তে পারি না সবসময়। এতে চোখের সমস্যা হয়। তাছাড়া আমাদের অনেকের বাসায় ইন্টারনেটও নাই।
আরেক শিক্ষার্থী বলে, আমরা মাত্র দুটি বই পেয়েছি, বাংলা আর ইংরেজি। অন্য বইগুলো কবে পাব জানি না।
এক শিক্ষক বলেন, অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই এখনও হাতে পাইনি। এতে শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে।
নীলফামারীর এক উপজেলায় দেখা যায়, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার ৪৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এখনো হাতে পায়নি সব বিষয়ের বই। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় শুধু ৮ম এবং মাদ্রাসায় ষষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির পুরো সেট বই বিতরণ করা হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান দাবি করেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছেই ৯০ শতাংশের বেশি বই পৌঁছে গেছে। তবে বাঁধাই করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
ছাপাখানা পরিদর্শনে দেখা গেছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই বাঁধাইয়ের অপেক্ষায় স্তূপ আকারে পড়ে রয়েছে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, নোট ও গাইড বইয়ের বাঁধাইয়ে বেশি মজুরি থাকায় শ্রমিকরা সেদিকে ঝুঁকেছে। ফলে পাঠ্যবইয়ের বাঁধাইয়ে দেরি হচ্ছে।
প্রথম পাতা
শ্রেণিদৃষ্টিতে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের চিত্তভূমি
খুন-ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের আহ্বান
ধর্ষণ-নিপীড়নকারী ও মব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার কর
বাঁওড় ইজারা বাতিল ও জেলেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ
সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও ঊধ্বমুখি দাম অনেক পণ্যে
গণতন্ত্র রক্ষায় বাম-প্রগতিশীলদের ঐক্যের বিকল্প নাই
‘ছায়া’
হামলা-মামলার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে বামজোটের বিক্ষোভ সমাবেশ
দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ব্যর্থ হচ্ছে
নারীর জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণে সংগ্রাম জোরদার করুন
কমরেড লাকী আক্তারের বিরুদ্ধে মব সন্ত্রাস বন্ধের আহ্বান সিপিবির
Login to comment..