সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী বিদ্রোহ

ছাত্র-যুব ইউনিয়ন ও সিপিবি নেতাদের হামলা-গ্রেপ্তার

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
একতা প্রতিবেদক : সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা, হয়রানি-গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আবারও রাজপথে নেমেছে ছাত্র-জনতা। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, যশোর, গাইবান্ধা, ভোলা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, লাল কাপড় বেধে প্রতিবাদ, সাংস্কৃতিক সমাবেশ, শোক মিছিল, গণমিছিল, মোমবাতি প্রজ্বলন, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এসব কর্মসূচিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার শিকার হয়েছে অনেকে। জোর করে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করেন শিক্ষার্থীদের। এসবের প্রতিবাদে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা মুখে লাল কাপড় বেধে রাজপথে নেমেছে। সবার এক দাবি ‘হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ছাত্রদের পাশাপাশি মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজও রক্ষা পাচ্ছে না সরকার দলীয় বাহিনীর নির্যাতনের হাত থেকে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়ছে না। শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমর্থনকারী ছাত্র-জনতা কাউকে পেলেই গ্রেপ্তার ও এর মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে বাছাই করে পাড়া মহল্লায় রেইড দিয়ে গণ গ্রেপ্তারের নামে গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা। গুম করার হুমকি দিয়ে আদায় করছে মোটা অংকের অর্থ। শিক্ষার্থীদের এসব দাবিতে রাজপথে সোচ্চার ছিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সারাদেশে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে হামলা-মামলা গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত ৩১ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যায় পুরানা পল্টন থেকে প্রেসক্লাব অভিমুখে মশাল মিছিলে পুলিশ আতঙ্কিতভাবে হামলা চালায়। মিছিল থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতা শোয়াইব আহমেদ আসিফ কে গ্রেপ্তার করে পল্টন থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পথে আসিফের ওপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালায় পুলিশ। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। পরবর্তীতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডার বাহিনী ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের আটকে রেখে তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা এনামুল হাসান অনয়, ঢাকা নগরের নেতা আরমান হোসেনসহ ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে থানায় আটকে রাখে পুলিশ। ছাত্রনেতাদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের কথা শুনে যুব নেতা জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, শাহীন ভূইয়া, শাখারভ হোসেন সেবক, রবিউল ইসলাম রবি, সিপিবি নেতা জলি তালুকদার, ত্রিদিব সাহা, হযরত আলী, দীপক শীল তাদের উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা এবং ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সকলকে তুলে নিয়ে রমনা থানায় আটকে রাখেন। রাতে পুলিশ বাধ্য হয়ে সকলকে ছেড়ে দেন। বাংলাদশে ছাত্র ইউনয়িন ও যুব ইউনিয়ন নেতাদের আটক এবং সারাদেশে ছাত্রদের ওপর হত্যা-নির্যাতন-গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত ১ আগস্ট বিকেলে পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদশে ছাত্র ইউনয়িন ও যুব ইউনিয়নের যৌথ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম। এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা ও হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিনের গতকালের শান্তিপূর্ণ মশাল মিছিলে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা করে। চলমান কোটা আন্দোলনে সরকার তার দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী দিয়ে গুলি চালিয়ে অসংখ্য ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। অতীতে কোন সৈ¦রাচারী সরকার পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করে টিকে থাকতে পারেনি এই সরকারও পারবে না। এই হত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে এবং এই সৈ¦রাচারী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। সমাবেশের শুরুতে পল্টন থেকে প্রেসক্লাব অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..