শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভী একতা প্রতিবেদক :
মাহমুদুল হাসান রিজভী। তার বাবার নাম জামাল উদ্দীন, মা ফরিদা ইয়াসমিন। জামাল উদ্দীন এবং ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় সন্তান ছিলেন রিজভী। নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়া উপজেলায় তার জন্ম।
বাংলাদেশের আর সাধারণ দশটা তরুণের মতই তার বেড়ে ওঠা। লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইলেকট্রনিকস বিষয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন রিজভী। ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে ঢাকায় এসেছিলেন ইন্টার্ণশিপ করার জন্য। ইন্টার্ণ হিসেবে কাজ করছিলেন বাংলাদেশ অটোমেশন ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে। এরই মধ্যে আরও কয়েকজন বন্ধুর মাধ্যমে তার পরিচয় হয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি সালমান রাহাতের সাথে। সালমানের সাথে পরিচয়ের পর থেকে ছাত্র ইউনিয়ন নিয়ে তার আগ্রহ জন্মাতে থাকে। সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন ছাত্র ইউনিয়নে। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করেন। জুলাই মাসে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হন ছাত্র ইউনিয়নের নির্দেশ মোতাবেক।
১৫ জুলাই, ছাত্রলীগ কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করলে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরা থানা শাখার বন্ধুদের সাথে গণআন্দোলনে যুক্ত হয় রিজভী। ১৬ জুলাই, ৬ জন শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ১৮ জুলাই উত্তরার বিএনএস এলাকায় ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরা থানা শাখার সদস্যদের সাথে আন্দোলনে অংশ নেন রিজভী। ১৮ জুলাই বিকেলে পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে আহত হন রিজভী। সেই আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি সালমান রাহাতও পুলিশের গুলিতে আহত হন। সন্ধ্যায় আন্দোলনে স্লোগানরত অবস্থায় পুলিশের বুলেট তার মস্তিকের বামপাশ ভেদ করে করে যায়। লুটিয়ে পরেন রিজভী। সহযোদ্ধারা দ্রুত উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রিজভীকে আইসিইউতে ভর্তি করেন। প্রায় ৪ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে হার মানেন রিজভী। ১৯ জুলাই, রাত সাড়ে ১২ টায় উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উত্তরা থানা শাখার সদস্য মাহমুদুল হাসান রিজভী। পরদিন (২০ জুলাই) নিজ গ্রামের বাড়ি হাতিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়।
বৈষম্য, সন্ত্রাস এবং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ রিজভী আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভী, অমর হউক।