একতা বিদেশ ডেস্ক :
রাহুল গান্ধীর কৃতিত্ব, ১০ বছরে যা কেউ পারেননি, তিনি তা সম্ভব করলেন। লোকসভার বিরোধী নেতা হিসেবে প্রথম ভাষণেই তিনি বাধ্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উঠে দাঁড়িয়ে জবাব দিতে। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, মন্ত্রিসভার দুই নম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও উঠলেন দুবার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মোট ছয়বার, পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব তিনবার এবং কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং একবার উঠে দাঁড়িয়ে রাহুলের বক্তব্য খণ্ডন করেন। বাদ যাননি সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুও।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বক্তৃতায় রাহুলের আক্রমণাত্মক ভাষণ সরকারপক্ষকে এতটাই ক্ষুব্ধ করেছে যে অমিত শাহ সরাসরি স্পিকারকে বলেন, বিরোধী নেতার ‘আপত্তিকর’ অংশগুলো যেন অবিলম্বে সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দেখা যায়, স্পিকার সেই দাবি মেনে রাহুলের ভাষণের অধিকাংশই বাদ দিয়েছেন।
গত লোকসভায়ও ঠিক এমনই হয়েছিল। রাহুলের ভাষণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল আদানি ও আম্বানিসম্পর্কিত যাবতীয় প্রসঙ্গ। যে যে বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছিলেন, সেগুলোর অধিকাংশ বক্তব্য ‘অসংসদীয়’ বলে সভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এবারও তারই পুনরাবৃত্তি ঘটল।
এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। স্পিকার ওম বিড়লাকে তিনি চিঠি লিখে বলেন যে তাঁর ভাষণের যেসব অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে, তা আদৌ নিয়মবিধি ভঙ্গ করেনি। রাহুল তাঁর চিঠিতে বাদ দেওয়া অংশ জুড়ে দিয়ে লিখেছেন, সংসদে মানুষের কথা বলা তাঁদের কর্তব্য। সেই কথা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
রাহুলের ভাষণ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের গাত্রদাহের কারণ হয়। কারণ, তিনি বিজেপির হিন্দুত্বকে আগাগোড়া আক্রমণ করেন। রাহুল বলেন, প্রকৃত হিন্দু কখনো হিংসার কথা বলে না, ঘৃণার কথা বলে না, অসত্য বলে না। মোদি, বিজেপি, আরএসএস হিন্দুধর্মের ঠিকাদার নয়। ওরা হিন্দুদের প্রতিনিধি নয়, হতে পারেও না। কারণ, তারা ২৪ ঘণ্টা হিংসা, ঘৃণা ছড়িয়ে চলেছে। অসত্য বলে চলেছে।
গোটা বিরোধী পক্ষকে দেখিয়ে রাহুল বলেন, ‘এখানে আমরা সবাই হিন্দু।’
হিন্দুত্বের অর্থ কী, তা বোঝাতে রাহুল দেবতা শিবের ছবি সভায় বারবার দেখান। প্রকৃত ধর্ম যে হিংসার কথা বলে না, তা বোঝাতে তিনি ইসলামের প্রার্থনা, গৌতম বুদ্ধ, যিশুখ্রিষ্ট, শিখ গুরু নানক দেবের ছবি দেখিয়ে প্রমাণ দেন।