বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পেশ মিছিলে পুলিশের বাধা
শ্রম ভবনের সামনে লাগাতার আন্দোলনে শ্রমিকরা
একতা প্রতিবেদক :
গাজীপুরে অবস্থিত জনাব এমএনএইচ বুলু’র মালিকানাধীন বিএনএস গ্রুপের দুইটি কারখানা ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফেকচারিং কোং লি. এবং এবিকো ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এ কর্মরত শ্রমিকদের যথাক্রমে ৫ মাস ও ৩ মাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস পরিশোধ না করে কারখানা দুইটি বেআইনিভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বকেয়া বেতনসহ কারখানা চালুর দাবিতে গত ২ জুলাই সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ করতে যাত্রা শুরু করলে প্রথমে কদম ফুয়ারার সামনে পুলিশি বাধা মুখের পড়ে শ্রমিকরা। পুলিশি বাধাকে উপেক্ষা করে মিছিলটি পুনরায় যাত্রা শুরু করলে মৎস্য ভবনের সামনে আবারও পুলিশ হুমকি-ধামকিসহ বাধা প্রদান করে এতে বাধ্য হয়ে সড়কে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ সমাবেশ করে প্রতিনিধি টিম স্মারকলিপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান এবং অপরাপর শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিলসহ শ্রমভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
সমাবেশে ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফেকচারিং কোং লি. শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মাফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমিন, আমিনুল ইসলাম, মো. রাসেল মিয়া ও মো. আব্দুল আলী।
এসময় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, আমরা শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছি। অনেক শ্রমিক পরিবারকে বাড়িওয়ালা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। অর্থাভাবে অনেক শ্রমিকের সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদুল আযহার দুইদিন আগে ন্যাশনাল কেমিক্যালের শ্রমিক বাবুল মিয়ার ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় অর্থাভাবে বাবুল মিয়া তার সন্তানকে ঠিকমত চিকিৎসা করাতে পারেনি এমনকি ছেলের পাশে থাকতে পারেনি। ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাওয়ার আশা করে যখন একটি টাকাও পায়নি তখন আমরা সকল শ্রমিকরা শূন্য হাতে ফিরেছি। ঈদ থাকুক দুরের কথা সন্তানের মুখে দুমুঠো ভাত দিতে পারছিনা। কোনো ধরনের রোগ না থাকা সত্ত্বেও মো. বাবুল মিয়া অর্থাভাবে এবং দুঃখ কষ্টের যন্ত্রণায় ঈদের দিনেই মৃত্যুবরণ করেছেন। এখনো আমরা অনেকে অর্থের অভাবে বৃদ্ধ মা-বাবাসহ পরিবারের কারও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারছিনা। এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে রাজপথে লড়াইয়ে নেমেছি।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঢাকায় শ্রম ভবনে লাগাতার অবস্থানসহ নানামুখী আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করেই ঘরে ফেরার ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া স্মারকলিপির অনুলিপি শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রম সচিব, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মহাপরিচালক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক, জেএমপি পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রেরণ করা হয়।
৫ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রম অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকরা।
এম.এন.এইচ বুলু সাহেবের মালিকানাধীন গাজীপুরে অবস্থিত দুটি কারখানা ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফেকচারিং কোং লি. এবং এবিকো ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর শ্রমিকদের ৫ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকায় শ্রম ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান আন্দোলন চলছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বহুমাত্রিক ধারায় চলবে বলে ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
গত ৩ জুলাই ইউনিয়নের সভাপতি শ্রমিকনেতা মাফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী, আমিনুল ইসলাম, কামরুজ্জামান রাসেল, হুমায়ুন কবীর, মো. রাসেল মিয়া, আব্দুল আলী প্রমুখ।
সমাবেশে শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমিন বলেন, অত্র কারখানা দুটিতে ইউনিয়ন গঠিত হওয়ার পর মালিক নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও গেজেট অনুসারে মজুরি প্রদান করতে বাধ্য হয়। অতীতে শ্রমিকদের সার্ভিস বেনিফিটসহ চূড়ান্ত পাওনা দিতেন না এখন তা দাবি করা হয়েছে। মালিক কোনো আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে নামমাত্র মজুরি দিয়ে কারখানা চালানোর হীন উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন ধ্বংস করতে অসৎ শ্রম আচরণ এবং এন্ট্রি ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকলাপ চালাচ্ছে।
এমতাবস্থায় অতিসত্ত্বর বেআইনিভাবে বন্ধ কারখানা চালু এবং বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করলে এই কারখানার শ্রমিকদের সাথে অপরাপর শ্রমিক-কর্মচারী ও দেশপ্রেমিক জনগণকে শ্রমিকদের আন্দোলনে যুক্ত করা হবে বলেও দাবি জানান তিনি।
শ্রমিকদের ৫ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকার শ্রমভবনের সামনে গত ৪ জুলাই তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান আন্দোলন চলছে।
ইউনিয়নের সভাপতি শ্রমিক নেতা মাহফুজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা কাজী রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ঢাকা মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুর্শিকুল ইসলাম শিমূল, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, জালাল হাওলাদার, কামরুজ্জামান রাসেল, হুমায়ুন কবির, রাসেল মিয়া, আব্দুল আলী প্রমুখ।
সমাবেশে শ্রমিক নেতা কাজী রুহুল আমিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে ৭ জুলাই ত্রিপক্ষীয় সভার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। আমরা আশা করছি সভায় এই অসহায় শ্রমিকদের দুর্বিষহ ও মানবেতর জীবনের কথা বিবেচনা করে শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। অন্যথায় এই আন্দোলন অবস্থান কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বুভুক্ষ শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্য আদায়ে তীব্রতর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
প্রথম পাতা
হামলা-মামলার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে বামজোটের বিক্ষোভ সমাবেশ
দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ব্যর্থ হচ্ছে
নারীর জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণে সংগ্রাম জোরদার করুন
কমরেড লাকী আক্তারের বিরুদ্ধে মব সন্ত্রাস বন্ধের আহ্বান সিপিবির
গণতন্ত্র রক্ষায় বাম-প্রগতিশীলদের ঐক্যের বিকল্প নাই
‘ছায়া’
খুন-ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের আহ্বান
ধর্ষণ-নিপীড়নকারী ও মব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার কর
বাঁওড় ইজারা বাতিল ও জেলেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ
সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও ঊধ্বমুখি দাম অনেক পণ্যে
শ্রেণিদৃষ্টিতে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের চিত্তভূমি
Login to comment..