সাতক্ষীরা সংবাদদাতা :
এবারও ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার আম রপ্তানি হচ্ছে। দেশের সীমানা পেরিয়ে সাতক্ষীরার হিমসাগর আম এখন ইউরোপের বাজারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। গত ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরা থেকে এই আম রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে ইতালিতে এই আমের কদর অনেক বেশি।
‘সাতক্ষীরা ব্র্যান্ড’ এই নামে পরিচিত সাতক্ষীরার রপ্তানিযোগ্য আম এবারও যাবে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স ও ইতালিতে। আম পেড়ে বাগানেই প্যাকেটজাতকরণের পর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহ তা নিয়ে রওনা হয় বিমানবন্দরের উদ্দেশে।
বরাবরের মতো এবারও সবার আগে বাজারে উঠেছে সাতক্ষীরার আম। আর এ কারণে আমের দেশের মানুষেরা এসেছেন সাতক্ষীরায় আমের ব্যবসা করতে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ীরা এখন সাতক্ষীরায়। সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। সাতক্ষীরায় শেষ হলে রাজশাহীতে আম ভাঙার সময় শুরু হয়।
বিদেশে রপ্তানির পাশাপাশি সাতক্ষীরার এই আম মিলবে বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুরসহ অন্যান্য জেলার বিভিন্ন আড়তে। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আমের মধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ, আ¤্র্রপালি, মল্লিকা, সিঁদুররাঙা, ফজলি, কাঁচামিঠা, বোম্বাই উল্লেখযোগ্য। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আম গুণে, মানে ও স্বাদে অনন্য। এছাড়া মাটি, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এখানকার বাগানের আম অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক আগে পাকে।
সাতক্ষীরার আমের কদর এখন অনেক বেশি। মধুমাসে অতিথি ও জামাই আপ্যায়নে আমের বিকল্প নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত জেলার মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন চাকরিজীবীরা সাতক্ষীরার আমের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আর এই আমের গুণগতমান রক্ষা ও কেমিক্যালমুক্ত রাখতে আমপাড়ার একটি নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়া হয় জেলা প্রশাসন থেকে।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বেসরকারি সংস্থা সলিডারিডাড ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম রপ্তানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় চলতি মৌসুমেও আম রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া আম উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী। এ জেলার আম অন্যান্য জেলার চেয়ে ১৫-২০ দিন আগে পাকে। খেতেও বেশ সুস্বাধু। তাই রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পেছনে ফেলে রপ্তানির বাজারে বিশেষ গুরুত্ব পায় সাতক্ষীরার ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আ¤্রপালি আম। তবে গত কয়েকবছর ধরে গোবিন্দভোগ আমও রপ্তানির তালিকায় যোগ হয়েছে।