কলিম শরাফীর শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা প্রতিবেদক : গান, নাচ, আবৃত্তি, স্মৃতিচারণের মাধ্যমে বরেণ্য সংস্কৃতিজন, কিংবদন্তি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত গুরু এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি কলিম শরাফী-এর শততম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৮ মে বিকাল সাড়ে ৫টায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে উদীচী আয়োজন করে আনন্দ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে কলিম শরাফী-এর জীবনী নিয়ে নিশাদ হোসেন রানা নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ প্রদর্শন করা হয়। কলিম শরাফী-এর জীবনী পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি বেলায়েত হোসেন। একক নৃত্য পরিবেশন করেন নেওয়াজ মৃন্ময় রহমান। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গীত বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দু’টি সমবেত সঙ্গীত। এরপর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম। কলিম শরাফী-এর জীবন, কর্ম ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, সংস্কৃতিজন ডা. সারোয়ার আলী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান, উদীচীর লোগোর-এর অন্যতম ডিজাইনার ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান, আবু তাহের এবং সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ-এর সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়। বক্তারা বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৪৩ সালের মন্বন্তর, ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনসহ প্রতিটি প্রগতিশীল, ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন কলিম শরাফী। ছাত্রজীবনে সমাজতান্ত্রিক আদর্শের সাথে পরিচিত হওয়া কলিম শরাফী, প্রথম গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময়। এরপর দুর্ভিক্ষের সময় তিনি গান, নাটক, লঙ্গরখানায় কাজ করা, ত্রাণ সংগ্রহ করা ইত্যাদি কাজে আত্মনিয়োগ করেন। এরপর যুক্ত হন ভারতীয় গণনাট্য সংঘ, আইপিটিএ’র সাথে। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার প্রাক্কালে ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তা প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন কলিম শরাফী। ১৯৬৮ সালে উদীচী প্রতিষ্ঠার পরের বছরই তিনি সংগঠনটির সাথে যুক্ত হন এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে যুদ্ধাপরাধী গোলম আযমের বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত গণ-আদালতের অন্যতম বিচারক ছিলেন কলিম শরাফী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, ইকবাল ইউসুফ, মাহমুনা ঐশী এবং মায়েশা সুলতানা ঊর্বি। দু’টি সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সঙ্গীত বিভাগের শিল্পীরা। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..