চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী ও মদদদাতা পুলিশের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের ঘোষণা

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশি বাধা

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email
একতা প্রতিবেদক : শ্রমজীবী মানুষের রক্ত শোষণ করে যারা ধন-দৌলত গড়ে তুলেছেন তাদের যত ক্ষমতাই থাকুক একদিন এই দেশে তাদের বিচার হবে। আজ যারা মানুষের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও রুটি-রুজি ধ্বংস করে ক্ষমতায় আসীন গণআদালত গঠন করে তাদের বিচার নিশ্চিত হবে। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ পদে পদে লাঞ্ছিত ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে। অবিলম্বে কার্ড-টোকেনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে শ্রমিক-মেহনতি মানুষের চলমান গণআন্দোলন গণবিস্ফোরণে রূপ নেবে। কার্ড ও টোকেনের নামে চাঁদাবাজিসহ সড়কে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ওপর সকল ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রিকশা-ভ্যান-ইজিজবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ মিছিল ও ডিএমপি কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারির সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, রাগীব আহসান মুন্না, গার্মেন্ট টিইউসির সভাপতি অ্যাড. মন্টু ঘোষ, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম, সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন নন্দী, কামরাঙ্গীরচর থানা কমিটির সহ-সভাপতি জামাল হোসেন মাঝি, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, হাজারীবাগ থানা কমিটির সভাপতি সুমন মৃধা, পল্লবী থানা কমিটির দপ্তর সম্পাদক ইমরান হাসান শিপলু, কালাপানি অঞ্চলের নেতা সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমজীবী রিকশা চালকদের কাছ থেকে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন করে সর্বোচ্চ মহল পর্যন্ত এই অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা হচ্ছে। কামরাঙ্গীরচর-হাজারীবাগ এলাকায় চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের সোহরাব গং ও পল্লবী এলাকায় সন্ত্রাসী আড্ডু বাহিনী সরকারদলীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সীমাহীন নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তাদের সকল জুলুম নিরীহ রিকশা চালক ও শ্রমজীবীদের বিরুদ্ধে চললেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। নিরুপায় শ্রমিকরা এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার প্রতিরোধ গড়ে তুললেও স্থানীয় ক্ষমতাসীন ও প্রশাসনের মদদে তাদের দৌরাত্ম্য থামছে না। অবিলম্বে এ নির্যাতন বন্ধ না হলে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী ও মদদদাতা পুলিশের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। শ্রমিকনেতারা বলেন, পুলিশ ও ট্রাফিকের যোগসাজসে কার্ড-টোকেনসহ নানা নামে সড়কে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ওপর চলছে সীমাহীন চাঁদাবাজি। রিকশা শ্রমিকদের ওপর সকল চাঁদাবাজি-জুলুম বন্ধ করতে হবে। ৪ কোটি বেকারের দেশে শ্রমিকরা এনজিও ও মহাজনী সুদে ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত যানবাহন তৈরি করে নিজের কর্মসংস্থান করেছে। সরকার জনগণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ না নিয়ে শ্রমিকের ঋণের টাকায় গড়ে তোলা কর্মসংস্থান বন্ধের পাঁয়তারা করছে। নেতৃবৃন্দ সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে শ্রমিকদের লাল পতাকা মিছিল পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করলে কদমফুল ফোঁয়াড়ার সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। পরবর্তীতে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারির নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। উল্লেখ্য, প্রতিবাদের মুখে বাধ্য হয়ে কামরাঙ্গীরচর-হাজারীবাগ এলাকার চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের মূলহোতা সোহরাবকে সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে পুলিশ।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..