সিপিবির জাতীয় পরিষদ সভায় আলোচনা করছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম
একতা প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় জনমত উপেক্ষা করে, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি ছাড়া, দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এতে সংঘাত- সংঘর্ষ অব্যাহত থাকবে। জনগণের জানমাল ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকবে এবং বর্তমান সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।
সভায় অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এখনই সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরুর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার নিশ্চিত করে নির্বাচনী তফসিল পুননির্ধারণ করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বলা হয়, এই অবস্থায় দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
গত ১৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বর্তমান পরিস্থিতি, নির্বাচন ও করণীয় বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র দেব। সভায় দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করার প্রচেষ্ঠায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ন্যায্য মজুরির দাবিতে চলমান আন্দোলন অগ্রসর করার আহ্বান জানানো হয়। সভায় শ্রমিক হত্যার সাথে জড়িতদের শাস্তি, ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানানো হয়।
সভায় দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শাসক শ্রেণির বড় দুই দলের ক্ষমতার দ্বন্দের কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নগ্ন হস্তক্ষেপ ও বিদেশি আধিপত্যবাদী শক্তির হস্তক্ষেপকে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় বলা হয়, জনমত উপেক্ষা
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ করে একতরফা নির্বাচন সংগঠিত হলে দুঃশাসন দীর্ঘায়িত হবে। চলমান সংঘাত-সংঘর্ষ বাড়তে থাকবে। এর ফলে দেশি-বিদেশি অন্ধকারের শক্তি দেশকে অগণতান্ত্রিক ধারায় নেওয়ার প্রচেষ্টা নেবে। সভায় সাম্প্রদায়িক শক্তির তৎপরতা সম্পর্কে সজাগ থাকতে এবং গণতন্ত্র, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করতে দেশবাসীর প্রতি দাবি জানানো হয়।
সভায় নীতিনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে চলমান আন্দোলনে অংশ নিতে পার্টির সব স্তরের সদস্য সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, অধ্যাপিকা এ. এন. রাশেদা, লক্ষী চক্রবর্তী, মোতালেব মোল্লা, পরেশ কর, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, কন্ট্রোল কমিশনের সদস্য ডা. এম. এ. সাঈদ, কাজী সোহরাব হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ডা. ফজলুর রহমান, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, আব্দুল্লাহ ক্বাফি রতন, আহসান হাবীব লাভলু, ডা. দিবালোক সিংহ, অ্যাড. এমদাদুক হক মিল্লাত, জলি তালুকদার, অ্যাড. মন্টু ঘোষ, মনিরা বেগম অনু, অ্যাড. সোহেল আহমেদ, অ্যাড. মাকছুদা আক্তার লাইলি, এম.এ রশিদ, রাগীব আহসান মুন্না, অ্যাড. হাসান তারিক চৌধুরী, ডা. সাজেদুল হক রুবেল, লুনা নূর, আবিদ হোসেন, অ্যাড. আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, আসলাম খান, অ্যাড. মহসীন রেজা, নিমাই গাঙ্গুলি, ড. কাবেরী গায়েন, সুব্রতা রায়, হাফিজুল ইসলাম, লাকি আক্তার, আশরাফুল আলম, মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, ইসমাইল হোসেন, খন্দকার লুৎফর রহমান, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সেলিম, ইদ্রিস আলী, জাহিদ হোসেন খান, মোসলেহ উদ্দিন, অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, হাসিনুর রহমান রুশো, ফররুখ হাসান জুয়েল, সাদেকুর রহমান শামীম, নলিনী সরদার, পিযুষ চক্রবর্তী, সাজেদুল ইসলাম।
এছাড়া ১৭ নভেম্বর পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দিনভর জাতীয় পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় বিভিন্ন জেলার ৪৩ জন প্রতিনিধি জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ঘোষিত নির্বাচন সম্পর্কে মতামত তুলে ধরেন।