প্রশ্নোত্তর
চিংড়ি মাছ কাটতে গিয়ে বা আরশোলা থেঁতলে গেলে দেখা যায় রক্ত বের হয় না। এর কারণ কী? চিংড়ি মাছ বা আরশোলার কি রক্ত নেই?
চিংড়ি মাছ বা আরশোলার রক্ত নেই এটা ভুল ধারণা। এ ধারণা হওয়ার অবশ্য কারণও আছে। আমাদের হাত-পা বা শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে যে গাঢ় লাল রঙের তরল পদার্থ বেরিয়ে আসে তাকে রক্ত বলে চিনে নিতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু চিংড়ি মাছ কাটতে গিয়ে বা আরশোলা থেঁতলে গেলে আমরা এ রকম লাল রঙের তরল পদার্থ বেরোতে দেখি না। কাজেই চোখের দেখা এই ঘটনা থেকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে চিংড়ি মাছ বা আরশোলার কোনো রক্ত নেই। প্রকৃতপক্ষে চিংড়ি মাছ বা আরশোলা উভয়েরই রক্ত আছে, কিন্তু তার রঙ আমাদের রক্তের মত গাঢ় লাল নয়। একটু পরিষ্কার করেই বলি। আরশোলার রক্ত বর্ণহীন এবং চিংড়ির নীলচে রঙের।
এই প্রসঙ্গে রক্তের উপাদান সম্পর্কে একটু বলা দরকার। রক্তের বিভিন্ন উপাদানগুলি প্রধানত হলো রক্তরস (চষধংসধ) ও রক্তকণিকা। রক্তকণিকা তিন ধরনের– লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা, অনুচক্রিকা। মানুষ বা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের লোহিত কণিকা লাল বর্ণের হয়, কারণ
এর মধ্যে হিমোগ্লোবিন নামে লৌহঘটিত লাল রঞ্জক থাকে। আর লোহিত কণিকার জন্যই রক্ত লাল। আমাদের রক্তের থেকে লোহিত কণিকাগুলোকে আলাদা করে ফেললে বাকি অংশের রঙ কিন্তু মোটেও লাল নয়! চিংড়ি মাছের ক্ষেত্রে তাম্রঘটিত নীলবর্ণের রঞ্জক হিমোসায়ানিন রক্তরসে থাকে। এ কারণে চিংড়ির রক্ত নীলচে। আরশোলার শুধু শ্বেত কণিকা আছে, অর্থাৎ মানুষ বা চিংড়ি মাছের মতো কোনো রঞ্জক পদার্থ আরশোলার রক্তে থাকে না। ফলে আরশোলার রক্তের কোনো রঙই থাকে না।
আসলে রক্ত মানেই লাল কিছু, এই ভ্রান্ত ধারণা থেকেই আপনার মনে হয়েছে চিংড়ি বা আরশোলা রক্তহীন।
Login to comment..