আদা, আলু, পেঁয়াজের দাম এক মাসে লাফাল ২৭৫%
বাজার লাগামছাড়া, নিয়ন্ত্রণের মুরোদ নেই সরকারের
একতা প্রতিবেদক :
এক মাস আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকা, সেটি এখন রাজধানীর বড় বাজারে ঠেকেছে আশিতে। পাড়া মহল্লার দোকানে আরও বেশি।
একই চিত্র আদার ক্ষেত্রে। এক মাস আগেও আমদানি করা পণ্যটির দাম ছিল কেজিতে ১৫০ থেকে ২৫০, সেটি ঠেকেছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।
কেবল ভরা মৌসুম গেল, এরই মধ্যে আলুর কেজি ১৫ থেকে উঠল ৪০ টাকায়। গত বছর একই সময়ে দাম ছিল ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা।
এভাবে কেন বাড়ছে দাম, তার নেই কোনো যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা।
‘খালি বোঝা যাচ্ছে, বাজার নিয়ন্ত্রণের মুরোদ এই সরকারের নেই,’ বললেন ক্ষুব্ধ এক ক্রেতা।
মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক দুর্দশাজনিত কারণে বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ তার দৈনন্দিন খাবারের পরিমাণ কমিয়েছে। এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আগে এক মাসে যে বাজার খরচ লাগত, এখন আড়াই সপ্তাহে তা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
‘লোকজন কী করবে? খাওয়া কমিয়েছি। এবার বেলা উপোস করতে হবে,’ বলেছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের এক ক্রেতা।
অথচ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরছে, চলতি বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি, যা চাহিদার প্রায় কাছাকাছি। বর্তমানে মজুদও আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টন।
গত দুই বছরে উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ার কারণে কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আমদানি সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
১৯ মে রাজধানীর নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজিতে, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকায়।
এক বিক্রেতা বলেন, ‘পাইকাররা বলে মাল নাই। অথচ আড়তে মালের অভাব নাই। দাম কিছুটা বাড়লে তারা আরও বাড়াইয়া বলে। আমাদের আর কী করার আছে? যেমন কিনব, তেমন বিক্রি করব।’
মিরপুরে অনেক এলাকায় দোকানে পেঁয়াজ ৯০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মিরপুরের শাহ আলী পাইকারি পেঁয়াজ আড়তের কিছু বিক্রেতা গণমাধ্যমকে এলসি বন্ধ থাকার কারণে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিতিশীলতার কথা বলছেন।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি আদা বিক্রেতা জানিয়েছেন, আমদানি বন্ধ থাকায় দাম চড়ছে।
একই দিন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশী রংপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পেঁয়াজের দাম বেড়েছে; বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যে দাম না কমলে আমদানির ব্যবস্থা করা হবে এবং দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত সপ্তাহেও তিনি একই কথা বলেছিলেন। কোনো লাভ তো হয়ইনি, উল্টো এক সপ্তাহে দাম বাড়ল কেজিতে ১৫ টাকা।
তেল, চিনি, সবজি, মাছ, মাংস সবকিছুর দাম বাড়তি; সীমিত আয়ের মানুষরা খাদ্যের পেছনে বাড়তি খরচ করতে অন্য খরচ কমাচ্ছে। অনেকের পক্ষে সেই সুযোগও আর থাকছে না।
‘আমাদের তো টাকা সীমিত। আলু আগে ২০ টাকায় নিতাম। এখন ৪০ টাকা কেজি। আগে দুই কেজি নিলে এখন এক কেজি নিচ্ছি। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও তাই। ২৫০ গ্রাম বা আধা কেজি নিতে হচ্ছে। আগে দেখা গেছে চার হাজারে খাওয়ার খরচ চলে যেত এখন ছয় হাজার লেগে যাচ্ছে,’ বলেছেন নিউ মার্কেটে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা।
এই সপ্তাহেও ঢাকার খুচরা বাজারে এ সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছে কোম্পানি এবং পাইকারদের ‘সিন্ডিকেটে’ বাড়ছে দাম।
‘২২০ টাকা কেজি ব্রয়লার। গতকালও এই দামে বিক্রি করছি। ১৯০ টাকা পাইকারি গেছে। আজ পরিবহনসহ ২০০ টাকা পড়েছে,’ বলেছেন এক বিক্রেতা।
আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘কাপ্তান বাজারে মাল কম আসার কথা বলে বলে দাম বাড়াইয়া রাখে। অভিযান, নিয়ন্ত্রণ যা করার সেখানে করতে হবে। আমরা আর কয়টা আর বেচি? আমরা তো লসে আছি।’
ডিমের দাম আরও বেড়েছে। বাজারে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে এখন ১৫০ টাকায়, গত সপ্তাহেও যা ছিল ১৪০ টাকা।
সরকারের বেধে দেওয়া দামে চিনি মিলছে না। সরকার বলেছে ১২০ টাকার বেশি বিক্রি করলে ব্যবস্থা। কিন্তু দোকানে ১৪০ এর নিচে নেই। ঝামেলা ভেবে অনেক দোকানি চিনিই তুলছেন নাা।
দাম কমেনি সবজির। মাছ, গরু ও খাসির মাংস, চাল, আটা বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। কাঁচামরিচের দাম উঠেছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
কী হবে মানুষের? কে ভাববে? জবাবদিহিহীন এই সরকার?
প্রথম পাতা
দেশে দ্রুত স্থিতিশীলতা আনতে হবে
শেয়ারবাজার কারসাজিতে লুটপাট কয়েক হাজার কোটি টাকা
‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও মানব মুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হবে’
জাতীয় সঙ্গীত-পতাকা মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে
আন্দোলনে ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা, উৎপাদন বন্ধ
ডেঙ্গু রোগী বাড়ছেই
মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা প্রশ্নে কোনো আপস নয়
‘কৌতুহলোদ্দীপক’
Login to comment..