
একতা বিদেশ ডেস্ক :
অন্তত ছয়টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। গত ৯ মার্চ স্থানীয় সময় বিকালে ওই মিসাইল পরীক্ষা শুরু হয়। পরদিন ওই পরীক্ষার বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এতে দেখা যায়, দেশটির প্রেসিডেন্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান কিম জং উন এবং তার মেয়ে সরাসরি মিসাইল উৎক্ষেপণ দেখছেন। এছাড়া সঙ্গে ছিলেন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও।
সিএনএন জানিয়েছে, কিম জং উনের মেয়ের নাম জু এ। ইদানিং প্রায়ই তাকে তার পিতার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিজের মেয়েকেই উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন কিম।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কিম জং উন পশ্চিম ফ্রন্ট থেকে সরাসরি পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছেন। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার অধীনে থাকা অঞ্চলে ২৮ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। সেখানে রাজধানী সিউল থেকে ৬৪ কিলোমিটার দূরে ওসান এবং ইয়েলো সাগরের তীরে অবস্থিত কুনসানে দুটি বিমানঘাঁটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
উত্তর কোরিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলি নিক্ষেপ করে তা ইয়েলো সাগরে গিয়ে পড়েছিল।
পরীক্ষার পরপরই দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ জানায়, উত্তর কোরিয়া পশ্চিমাঞ্চলীয় নামপো এলাকা থেকে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন নির্দেশ দিয়েছেন যে, আর্টিলারি ইউনিটগুলিকে দুটি মিশনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রথমটি হচ্ছে, যুদ্ধে নিজেদের মোকাবিলা করার জন্য এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে, যুদ্ধ শুরু করার জন্য।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পিয়ংইয়ং তার শীতকালীন প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। এদিকে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিওন হা-কিউ আরও বলেন, প্রতি বছর মার্চ মাসেই এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বাহিনী নিয়মিত বিমান মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়া মিত্র দেশ দুটির জন্য গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মহড়া হতে যাচ্ছে। ২০১৭ সালেও এ ধরনের সামরিক প্রদর্শন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেটি পিছিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসে সংকট সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি ব্যর্থ হয়।
উত্তর কোরিয়া এরপর তার মিসাইল কার্যক্রম বহুগুণ শক্তিশালী করেছে। ২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক মিসাইল পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। এরমধ্যে রয়েছে প্রায় সব ধরণের মিসাইল। যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো শহরে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম একাধিক আইসিবিএমও পরীক্ষা করে দেশটি। প্রায়ই জাপান সাগরে এমনকি জাপানের উপর দিয়েও মিসাইল পরীক্ষা চালাতে শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া। যদিও এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ২০২৩ সালে এসে কিছুটা ধীর হয়ে গেছে। কিন্তু কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা রয়েই গেছে।