ত্রিশালের ৬ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড
একতা প্রতিবেদক :
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালের পলাতক ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২৩ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করে।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি হলেন- মো. মোখলেসুর রহমান মুকুল, সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান মাহমুদ ফকির ও নাকিব হোসেন আদিল সরকার।
দণ্ডিত এই আসামিদের মধ্যে মুকুল, রতন ছিলেন স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতা। পরে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর সমর্থনে শঅন্তি কমিটি গঠন করেন এবং রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।
এছাড়া আসামি শামসুল হক, নুরুল হক, সুলতান মাহমুদ ও নাকিব হোসেন আদিলও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হন বলে উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে।
এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশাল এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, হত্যা এবং হিন্দুদের নিপীড়নের মত ছয় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তার মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে বীর মুক্তিযাদ্ধা আব্দুল হামিদ হেমনকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় ছয় আসামির সবাইকে মৃত্যদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়।
৩ নম্বর অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা ইউনুস আলীকে অপহরণ, আটক ও হত্যার জন্য নির্যাতনের ঘটনায় সুলতান মাহমুদ ফকির বাদে বাকি ৫ জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
আর ৪ নম্বর অভিযোগে একজন বীর মুক্তিযাদ্ধাকে অপহরণ, আটক ও হত্যার জন্য নির্যাতনের ঘটনায় মোখলেসুর রহমান মুকুল, সাইদুর রহমান রতন ও নুরুল হক ফকিরকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে দুই বেসামরিক নাগরিককে অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের ঘটনায় সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হকফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান মাহমুদ ফকির ও নাকিব হোসেন আদিল সরকারকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
৫ নম্বর অভিযোগে আট বেসামরিক নাগরিককে অপহরণ, আটক ও অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় ছয় আসামির সবাইকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
৬ নম্বর অভিযোগে চার হিন্দু নাগরিককে অপহরণ, আটক ও অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় আসামিদের সবাইকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
প্রশিকিউশনের পক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন প্রশিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম।
একাত্তরে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন ২০১৫ সালে ময়মনসিংহের আদালতে এ মামলা দায়ের করলে পরে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি শুরু হয় তদন্ত। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত সংস্থা অনুসন্ধান কাজ শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়।
পরের বছর ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগে আসামিদের অভিযুক্ত করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ হয়।
এ মামলার অভিযোগপত্রে আসামি ছিলেন মোট ৯ জন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন দুজন। তারাসহ মোট তিনজন মামলার বিচার চলাকালে মারা যান। পরে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রশিকিউশনের মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় এ মামলায়।
যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়েছিল।
প্রথম পাতা
বিদেশিদের কাছে ধরনা রাজনৈতিক দলগুলোর দেউলিয়াত্ব
‘ফ্যাসিবাদী শাসন বহাল রেখে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না’
গাইবান্ধায় কৃষক নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি
নড়াইলের বড়দিয়ায় উদীচী উৎসবে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ‘প্রশাসন ব্যর্থ’
ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’
ছাত্রীদের আন্দোলন, ‘পদের গরম দেখানো’ বিচারককে সরানো হল বগুড়া থেকে
সুখের সূচকে ২৪ ধাপ নামল বাংলাদেশ
মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা
‘শব্দ-নিঃশব্দ’
Login to comment..