পল্টন হত্যাকাণ্ডের বিচার, পুনঃতদন্ত দাবি

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা প্রতিবেদক : দুই দশকেরও বেশি সময় আগে, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র মহাসমাবেশে বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকীতে আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দুর্নীতি, লুটপাট, সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য আওয়ামী ও বিএনপি ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীলদের বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। নেতৃবৃন্দ হত্যাকারী ও এর নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার না হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় কিন্তু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধের জন্য যেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া প্রয়োজন সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হয় না। ২০ জানুয়ারির হত্যাকাণ্ডের পরিপূর্ণ বিচার না হওয়ায় হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দীর্ঘসূত্রিতায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। বিচারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সংবাদপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন যে, সাক্ষীরা নিয়মিত সাক্ষ্য প্রদান করে না। কিন্তু সিপিবির সাক্ষীরা নিয়মিতই সাক্ষ্য প্রদান করে আসছেন। এরকম মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার দায়িত্বে মামলা থাকলে এই মামলার নিষ্পত্তি অনিশ্চিত হয়ে যাবে। এই ধারা চলতে থাকলে রাজনীতিতে সুষ্ঠু ধারা ব্যাহত হবে, আর ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত সিপিবি’র মহাসমাবেশে বোমা হামলায় শহীদ হন হিমাংশু মণ্ডল, আব্দুল মজিদ, আবুল হাসেম, মোক্তার হোসেন ও বিপ্রদাস রায়। ওই ঘটনার ২২তম বার্ষিকীতে ২০ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় এই শহীদদের স্মরণে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এড. আনোয়ার হোসেন রেজা। অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, সাম্যবাদী দল,বাংলাদেশ জাসদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘর আসর, কৃষক সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, গার্মেন্ট টিইউসি, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, সিপিবি ঢাকা মহানগর (উত্তর), সিপিবি ঢাকা মহানগর (দক্ষিন), কেন্দ্রীয় কমিটির সংশ্লিষ্ট শাখা, কেন্দ্রীয় দপ্তর শাখা, একতা, নারী সেল, লেখনী কম্পিউটার্স এবং ঢাকা নগরের বিভিন্ন শাখাসহ শতাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। আন্তর্জাতিক পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবি’র লাখো মানুষের মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালায় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। এই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরীর শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই এবং খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কমরেড বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরেই ২ ফেব্রুয়ারি শহীদের মৃত্যুবরণ করেন। বোমা হামলায় শতাধিক কমরেড আহত হন। এদের মধ্যে অমর মণ্ডল, মো. জাহাঙ্গীর, আব্দুস সাত্তার, মিজানুর রহমান, এম. এ করিমসহ অনেকে পঙ্গু অবস্থায় বেঁচে আছেন।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..