চীনে ভারি বর্ষণ, টর্নেডোর আঘাত

Facebook Twitter Google Digg Reddit LinkedIn StumbleUpon Email

একতা বিদেশ ডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে চীনের পার্ল রিভার অববাহিকার নিচু এলাকায় ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে দেশটির উৎপাদন, পরিবহন ও অন্যান্য কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। এ দিকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চীন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে ইতোমধ্যে সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকিতে পড়েছে। চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানায়, মে’র শুরু থেকে জুনের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেশটির গুয়াংদং, ফুজিয়ান ও গুয়াংঝি প্রদেশে গড়ে ৬২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা ১৯৬১ সালের পর সর্বোচ্চ। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের একটি ভিডিও ফুটেজে গুয়াংদং রাজ্যের শাওগুয়ান নগরীতে সাময়িক আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজনকে গাদাগাদি করে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী গুয়াংঝি অঞ্চলে ঘোলাটে পানির ঢলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। জরুরি উদ্ধার কর্মীদের রাবারের নৌকাতে করে গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে দেখা যায়। গুয়ংদং কর্তৃপক্ষ ২০ জুন জানায়, দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে দুই লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিন জিয়ানঝি প্রদেশে বন্যার জন্য রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ফুজিয়ানে বন্যার কারণে এ মাসের শুরু থেকে দুই লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিনে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে বন্যায় কমপক্ষে ২১ জনের প্রাণহানি ঘটে। বাতাসের ঘূর্ণিতে উড়ে যাচ্ছে ছোটোখাটো অনেক জিনিস। হঠাৎ টর্নেডোর আঘাতে ভয়ে চিৎকার করছে মানুষ। এমনই দৃশ্য চীনের গুয়াংডং প্রদেশের। দেশটিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই এমন টর্নেডোর আঘাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। টর্নেডোয় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় অনেক এলাকা, উপড়ে যায় গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িঘর ও যানবাহন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, টর্নেডো আঘাত হানার পর অনেক এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিছু এলাকায় সংযোগ দেয়া গেছে। রাস্তাঘাট থেকে ভেঙে পড়া গাছপালা সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। এদিকে চীনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে ভারি বৃষ্টি ও বন্যার পাশাপাশি হচ্ছে ভূমিধস। পানির প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে আধাপাকা ঘরবাড়ি। বন্যায় বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের একটি ফায়ার ইঞ্জিনও ভেসে যেতে দেখা যায়। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে গত ৬০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও এক সপ্তাহ চীনের অন্তত ৭টি প্রদেশে এমন ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া দফতর। প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোগতভাবে উন্নত চীন হিমশিম খাচ্ছে এ দুর্যোগ মোকাবিলায়। দেশটিতে বনভূমি উজাড় এবং নদী শাসন করে অসংখ্য প্রকল্পই প্রকৃতির এমন ভয়াল রূপের কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন



Login to comment..
New user? Register..