একতা প্রতিবেদক :
আমাদের দেশে নারী নির্যাতন একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক নারী। দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেলেও নারী নির্যাতনের সংখ্যা বাড়ছে অনেক বেশি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি নারী নির্যাতনের অন্যতম কারণ। দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে না বিধায়, অন্যরা এই ধরনের কাজে ভয় পাচ্ছে না। এতে দিনকে দিন বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা।
নারী নির্যাতনের পেছনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক রীতিনীতি, পারিবারিক শিক্ষা, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব অনেকাংশে দায়ী। এই দায় সমাজের, সামাজিক প্রেক্ষিতের। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের সামাজিক-সাংস্কৃতিক রীতিনীতির সমন্বিত পরিবর্তন করতে হবে, সহিংসতার শিকার নারীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করে নারীর প্রতি সংবেদনশীল বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, প্রচলিত আইনের সংস্কার করতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে মোট ৩৫৪ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১০১ জন তন্মধ্যে ৪১ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার, ৩ জন কন্যাশিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার, ৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে। এছাড়াও ২ জন কন্যাশিশুসহ ৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ৪ জন শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে। ৫ জন কন্যাশিশুসহ ৯ জন যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এসিডদগ্ধের শিকার হয়েছে ৩ জন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে ২ জন। ৬ জন কন্যাশিশু উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে। ১৬ জন কন্যাশিশুসহ ১৮ জন অপহরণের ঘটনার শিকার ও ১ জন কন্যাশিশুকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। ৪ জন কন্যাশিশুসহ নারী পাচারের শিকার হয়েছে ২৯ জন। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ জন, তন্মধ্যে ২ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ জন কন্যাশিশুসহ মোট ২৩ জন। বিভিন্ন কারণে ১২ জন কন্যাশিশুসহ ৫১ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও ৫ জন কন্যাশিশুসহ ১৬ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৪ জন কন্যাশিশুসহ ২৮ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ৮ জন কন্যাশিশুসহ ১৯ জন আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২ জন কন্যাশিশুসহ সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছে ৫ জন। বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে ৮টি, তন্মধ্যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে ৭টি।
উল্লেখ্য যে, গত ৩ অক্টোবর সংবাদ পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনাকালীন দীর্ঘ দেড় বছরে শুধুমাত্র টাঙ্গাইল জেলাতেই ১২৪২টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে।