ফাঁসিই হচ্ছে জামাতের আজহারের

Posted: 03 নভেম্বর, 2019

একতা প্রতিবেদক : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামকে (আজহার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির রায়ে আজহারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। গত ৩১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন। আপিল বেঞ্চের বাকি তিন সদস্য হলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান। তবে কোন বিচারপতি রায়ে ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন তা জানায়নি আপিল বিভাগ। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম এবং রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে জামায়াত নেতার আইনজীবী বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, তাঁরা রিভিউ করবেন। রায় ঘোষণা উপলক্ষে ওইদিন সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতের ফটকসহ আপিল বিভাগের প্রবেশমুখেও মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী সবাইকে এদিন তল্লাশি ও পরিচয় নিশ্চিত হয়ে আদালতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ এদিন সকালে আদালতে প্রবেশ করতে পারেননি। একাত্তর সালে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোসহ তিন অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামির নেতা আজহারকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আজহার। এই আপিলের ওপর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয় গত ১০ জুলাই। এরপর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন আপিল বিভাগ। আদালতে এই যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগে ফাঁসি, দুটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং একটি অভিযোগে তাঁকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এক নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আজহারাকে সেই অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়। ২, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর এবং ৬ নম্বর অভিযোগে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বছরের ১৮ জুন এই জামায়াত নেতার আপিল শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন তিনি। এরপর দীর্ঘ চার বছর পর আপিলের শুনানি শুরু হয়।