দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির সুলুকসন্ধান

Posted: 07 জুলাই, 2019

গোলাম মোস্তফা : দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে জিডিপির প্রবৃদ্ধি; বাড়ছে মানুষের জীবনযাত্রার মানও– এ সবই সত্যি। কেউ এসব অস্বীকার করতে পারবে না। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল– সারাবিশ্বের কাছে এমনটিই দাবি সরকারের। সরকারের তরফ থেকে প্রায়ই বলা হয়, দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সে কারণে তাদের কেনাকাটাও বেড়েছে। বেড়েছে তাদের ভোগ ব্যয়। আসলে এসব হিসাব মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হিসাবের মতোই শুভঙ্করের ফাঁকি। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির হিসাবটি বাস্তবতার সাথে তেমন মেলে না। হ্যাঁ, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে এটা সত্যি; তবে তা কিছু লোকের– যাদের সম্পদের কোনো হিসাব নেই; নেই কোনো পরিসংখ্যান। এ শ্রেণির লোকের ক্রয়ক্ষমতাকেই আসলে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। সবার সামনে বুক ফুলিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এটা যে একটা ফাঁকা বুলি, তা কানার ভাই অন্ধেরও বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না। এক্ষেত্রে একটি কথা প্রায় কেউই বলেন না। যে হারে দেশে ধনীলোকের সংখ্যা বাড়ছে– সে হারে কি দারিদ্র্য কমেছে? কিংবা ধনী-গরিবের পার্থক্য কমেছে? আসুন দেখি, দেশের তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান এক্ষেত্রে কী বলে? সরকারি হিসাব বাদ দিলেও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার হিসাবমতে, দেশে প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ পরোক্ষ-অপরোক্ষ বেকার। তা হলে এসব কোটি কোটি বেকারের কি কোনো ক্রয়ক্ষমতা আছে? যার কোনো আয়ই নেই, তার আবার ব্যয় করার কী ক্ষমতা থাকতে পারে? কাজেই সরকার যে কথায় কথায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে জাহির করে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। দেশের মুষ্টিমেয়ের ক্রয়ক্ষমতা পরিসংখ্যানাতীত বৃদ্ধি পেলেও এক্ষেত্রে দেখা দরকার, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাদের চাহিদানুযায়ী মৌলিক পণ্য ক্রয় করতে পারছেন কিনা। দেখা দরকার, তারা কতটুকু স্বস্তিতে জীবনযাপন করতে পারছেন। শুধু বড় বড় অনুৎপাদনশীল ফ্লাইওভার, ব্রিজ-কালভার্ট করে দেখালেই কী সাধারণ মানুষের উন্নতি হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়! দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যদি বৃদ্ধিই পায়, তাহলে তরুণ সমাজ এত বিদেশমুখী হচ্ছে কেন? সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ৬০ জন মানুষের মৃত্যু– যার অধিকাংশই বাঙালি। বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। বিদেশে গিয়েও এসব তরুণের প্রত্যাশিত স্বর্গের দেখা মেলে না। প্রত্যাশিত স্বর্গের দেখা মেলে না বলেই তাদের অচিরেই পটল তুলতে হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ বিদেশকর্মীর মরদেহ দেশে আনা হচ্ছে। এসব কর্মীর বেশিরভাগই শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে, নয়তো ঋণ করে বিদেশে যায়। দেশ যখন নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দিকে পৌঁছাচ্ছে, তখন কীসের আশায়, কীসের নেশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব তরুণ দেশ ছাড়ছে? কেন বেঘোরে প্রাণ হারাতে হচ্ছে তাদের? দেশের জাতীয় ও মাথাপিছু আয় বাড়লেই যে সব মানুষের জীবনযাত্রার মান বা ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, অর্থনৈতিক সূত্র কিন্তু সেটা সমর্থন করে না। মাটি এক জায়গায় উঁচু করতে হলে, নিচু করতে হয় অন্য জায়গার মাটি। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। দেশে একজন কোটিপতি তৈরি হলেও, তার জন্য হাজার হাজার মানুষকে গরিব হতে হয়। তাদেরকে নিঃস্ব হতে হয়। এটাই অর্থনীতির নিয়ম। সামষ্টিক অর্থনীতির স্বাস্থ্য দিয়ে তৃণমূলের অবস্থা তেমন বোঝা যায় না। একদিকে দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও, অন্যদিকে বাড়ছে চরম বৈষম্য। শহরে বড় বড় শপিংমল গড়ে উঠেছে; গড়ে উঠছে বড় বড় অবকাঠামোও। কিন্তু সেই সঙ্গে বাড়ছে জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো লোকের সংখ্যাও। তাই বাংলাদেশের নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উল্লম্ফনের খবর শুনে আহ্লাদিত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। দেশের সব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যদি সন্তোষজনক পর্যায়ে বৃদ্ধি পেত, তা হলে পরিসংখ্যান সংস্থাগুলো ভিন্নকথা বলত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ওয়েলফেয়ার মনিটরিং সার্ভের অনুসন্ধান অনুযায়ী, মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের সম্পদের সবচেয়ে বড় অংশ কুক্ষিগত। কোনোভাবে দিন পার করছেন দেশের প্রায় ৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। আর দারিদ্র্য নিত্যসঙ্গী এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ ৪০ হাজার। দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিতের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ মানুষ মৌলিক চাহিদা মেটাতে গিয়ে হয়ে পড়ছেন ঋণগ্রস্ত। অথচ বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন ছিল এ দেশের গণমানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক গভীর মানবিক সংগ্রামী দর্শন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনদর্শনের ভিত্তিই ছিল দেশের এসব গণমানুষ। অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কাছে ৪০ শতাংশের বেশি সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ায় দেশে আয় বৈষম্য বাড়ছে; বাড়ছে ধনী-গরিবের বৈষম্যও। ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি অ্যাকাউন্টধারী ছিল মাত্র পাঁচজন। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩ জনে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে কোটিপতির মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৬২। এরপর অক্টোবর ২০০১ থেকে ডিসেম্বর ২০০৬ পর্যন্ত কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছিল ৮ হাজার ৮৮৭ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছরে বেড়েছিল ৫ হাজার ১১৪ জন। দেশে কোটিপতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে চমকে ওঠার মতো অবস্থা। “দেশে গত এক দশকে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় চার গুণ। এ সময়ে দেশে প্রতিবছর গড়ে ৫ হাজার ৬৪০ জন কোটিপতি হয়েছেন।” (আমাদের সময় : মে ২৫, ২০১৯)। দেশে কোটিপতির অ্যাকাউন্ট বাড়ার অর্থ দেশের সম্পদ ক্রমেই কিছুসংখ্যক লোকের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। ধনী-গরিবের বৈষম্য প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। প্রকট বৈষম্যের কারণেই কিছু লোক সম্পদের পাহাড় গড়ছে, অন্যদিকে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সে কারণে সমাজের ৭৫ শতাংশ মানুষের জীবনে অসচ্ছলতা ও অস্বাচ্ছন্দ্যের অন্ত নেই। অথচ দেশের কতিপয় কোটিপতির ক্রয়ক্ষমতা কল্পনারও অতীত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কোটিপতির ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দেশের শাসকগোষ্ঠী সব সময় কোরাস গেয়ে চলেছেন। অথচ উপরের পরিসংখ্যান তাদের সে হিসাব সমর্থন করে না। এবার একটু দৃষ্টি দেয়া যাক, দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে দিনরাত গতর খাটা প্রায় ১৫ কোটি মানুষের দিকে; একদিন কাজ না জুটলে যাদের উপোস থাকতে হয়– সেই শ্রমিক-কৃষকের অবস্থার দিকে। এদের শ্রমে-ঘামেই দেশ আজ নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশে বেসরকারি খাতে কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ‘শ্রমশক্তি জরিপ-২০১৩’ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট কর্মরত শ্রমশক্তি ৫ কোটি ৮১ লাখ। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমবাজারে কাজ করেন মোট শ্রমশক্তির মাত্র ১৩ ভাগ। বাকি ৮৭ ভাগ কাজ করেন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এদের কাজ আছে, কিন্তু আয়ের কোনো নিশ্চয়তা নেই, শ্রমের স্বীকৃতি নেই, নেই নিরাপত্তা ও কোনো মানমর্যাদা। বেঁচে থাকার জন্য তাদের প্রায় সময়ই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়। দেশের সব শহর-পৌরশহর, জেলা-উপজেলাতেই দেখা যায় বিপুল পরিমাণ দোকানপাট। এসব দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁয় কোটিরও বেশি কর্মচারীর জন্য কোনো ন্যূনতম বেতন কাঠামো নেই। দেশে বর্তমানে গৃহকর্মীর সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। মজুরি প্রশ্নে তারা চরম অন্যায়ের শিকার। এখনও তারা শ্রমিক হিসেবে রাষ্ট্রের কোনো স্বীকৃতি পায়নি। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটিও তাদের কপালে জোটে না। শ্রমের ন্যায্য মজুরি বুঝে নেয়া তো দূরে থাক, মারধর ও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়াই দুষ্কর। দেশে প্রায় ২৫ লাখের মতো যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। রিকশা-ভ্যানসহ পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক যুক্ত, যার বড় একটা অংশ আবার শিশুশ্রমিক। এদের মজুরি খুবই কম হয়। ড্রাইভিং শেখানোর নামে নামকাওয়াস্তে দৈনিক কিছু টাকা দেয়া হয়; যা প্রায় বেগার খাটারই সমতুল্য। সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের মোট শ্রমশক্তির সাড়ে ৩ শতাংশ নির্মাণশিল্পে নিয়োজিত। সে হিসাবে এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। এদেরও ন্যূনতম বেতনের কোনো বিধিবিধান নেই। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প খাত চা শিল্পের প্রায় দেড় লাখ শ্রমিকেরও ন্যূনতম মজুরি বলে কিছু নেই। এ ছাড়া নতুন প্রযুক্তির খাত যেমন মোবাইল, আইটিসহ বাণিজ্যিক শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন স্তরে অসংখ্য মজুর নামমাত্র বেতন-ভাতায় কাজ করে চলেছেন। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায়, দেশের সেই অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো প্রশ্নই আসে না। বাংলাদেশে জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও কৃষিশ্রমিক বা ক্ষেতমজুর। সরকারি হিসাবে দেশের ৪৫ ভাগ মানুষ কৃষিশ্রমের সঙ্গে যুক্ত। কৃষিকর্মে শ্রম বিক্রির মাধ্যমে প্রাপ্ত মজুরিই তাদের জীবন-জীবিকার প্রধান অর্থনৈতিক উৎস। সংবিধানমতে, শ্রমিক হিসেবে তাদের ন্যায্য মজুরি বা পারিশ্রমিক পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এসব শ্রমিকের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট মজুরিনীতি নির্ধারণ করা হয়নি। এই বিপুল পরিমাণ কৃষিশ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি তো কল্পনার অতীত, এখনও তাদের ন্যূনতম মজুরির কোনো ব্যবস্থা হয়নি। বড় খাত কিংবা ছোট খাত, প্রতিষ্ঠিত শিল্প খাত কিংবা অনানুষ্ঠানিক খাত– সর্বত্রই মজুরি নিয়ে অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান। ফলে বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী জনগণ দিনরাত শ্রম দেয়ার পরও ন্যায্যমজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাঁচার মতো তাদের প্রয়োজনীয় মজুরি নিশ্চিত করা হচ্ছে না। তাদের প্রয়োজনীয় মজুরি নিশ্চিত করতে আইনকানুনেও তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি। এটা দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য নির্মূলের ক্ষেত্রেও বড় বাধা। ব্যতিক্রম শুধু দেশের ২১ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষেত্রে। তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি না চাইতেই করা হচ্ছে। উপরের আলোচনা থেকে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, দেশের মুষ্টিমেয় লোকের ক্রয়ক্ষমতা আকাশসমান বৃদ্ধি পেলেও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা খুব একটা বাড়েনি। তাদের সামনে স্বস্তিময় জীবনের প্রত্যাশা এখনও অধরাই রয়ে গেছে। সাগরে লাশ হয়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখলেও এবং মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অন্যের মুখে অন্ন তুলে দিলেও, বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটু চাকচিক্য দেখা গেলেও– সেই শ্রমিক-কৃষকের ক্রয়ক্ষমতা তেমন বাড়েনি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে তেমন বাড়েনি, সে সম্পর্কে আর একটা পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করেই লেখাটার ইতি টানব। কিছুদিন আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৪-৭৫ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত ৪০ বছরে দেশে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে প্রতিবছর গড়ে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ গত দশকে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি বেড়েছে প্রতিবছর ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ হারে এবং প্রতিবছর ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ হারে মজুরি বেড়েছে কৃষিশ্রমিকের। মূল্যস্ফীতির মানেই হলো মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া। অর্থাৎ একই পরিমাণ টাকা খরচ করে আগের চেয়ে কম দ্রব্য পাওয়া। এতে শ্রমজীবী মানুষের প্রকৃত মজুরি কমে যায়। এ পরিসংখ্যানেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো আভাস নেই। অতএব, সাধু সাবধান।