১৯৭ কেন্দ্রে শতভাগ ভোট ৮৮৯টিতে ৯৫ ভাগের বেশি

Posted: 07 জুলাই, 2019

একতা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু থেকেই ছিল। তবে, সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল, ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর রাতেই করে ফেলা নিয়ে। এ ছাড়া কেন্দ্রে কেন্দ্রে একটি নির্দিষ্ট মার্কার পক্ষে অস্বাভাবিক ভোট পড়া তো ছিলই। নির্বাচনের প্রায় ছয় মাস পর নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী একটি প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। আর এতেই বেরিয়ে এসেছে অস্বাভাবিক ভোট পড়ার চিত্র। এসব কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কমপক্ষে ১৯৭টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। আর অন্তত এক হাজার ৮৮৯টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৯৫ থেকে ৯৯.৯৯ শতাংশ। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়। গোটা দুনিয়াতেই বিরল ঘটনা। তারা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোথাও ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়লেই সেখানে কমিশনের আলাদা নজর দেয়া উচিত। সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি সংস্থা ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্স বা ফেমা কেন্দ্রভিত্তিক এই ফলাফল প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। যেটা হয় না পৃথিবীতে কোথাও, সেটা চলতে পারে না। আমরা শুধু এটা দেখেছি মিলিটারি আমলে ডিক্টেটরদের সময়। যখন তারা গণভোট নিয়েছে তখন আমরা দেখেছি হান্ড্রেড পার্সেন্ট, নাইনটি পার্সেন্ট অনেক সময় একশভাগেরও বেশ ভোট পড়ার নজির আছে। এটা হয় একটা অটোক্রেটিক রুলের সময়। তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু এখন তো আমাদের ডেমোক্রেসি। এখানে তো যে ভোট দিতে যাবে যাবে, ইচ্ছা হলে যাবে না। তাদের ওপরে তো কারো কোনো হাত নেই। সেখানে হান্ড্রেড পার্সেন্ট কিভাবে ভোট পড়লো এটা ইলেকশন কমিশনের নিজেদেরকেই বের করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট বেশিরভাগ আসনে জয় পেয়ে সরকার গঠন করেছে। আর বিরোধী ২০ দলীয় জোটে নেতৃত্বে থাকা বিএনপি এবং তাদের নির্বাচনী জোট ঐক্যফ্রন্ট মাত্র সাতটি আসনে জয় পেয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই নানা অভিযোগ এসেছে বিরোধী দলগুলোর কাছ থেকে। এর আগে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি ৫০টি আসন পর্যবেক্ষণ করে ৪৭টিতে বুথ দখল করে জাল ভোট, এমনকি ভোটের আগে ব্যালটে সিল মারার মতো অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে এই অনিয়মের ব্যাপারে কমিশন সচিব মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয় কিন্তু অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই বলেছেন যে এটা যদি কোনো নির্বাচনকালীন অথবা গেজেট প্রকাশের আগে কেউ অভিযোগ করতো, সুনির্দিষ্টভাবে, তাহলে নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখতে পারতো। যেহেতু এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি বা কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসেনি, গেজেট নোটিফিকেশন করার পরে আর কিছু করার থাকে না। কিন্তু কেউ যদি এটা নিয়ে এখন কথা বলতে চান তাহলে উপযুক্ত আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে।