ইস্তাম্বুলে পুনঃভোট

Posted: 12 মে, 2019

একতা বিদেশ ডেস্ক : তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ নগরী ইস্তাম্বুলের স্থানীয় নির্বাচনে পুনঃভোট হবে। প্রথম ভোটাভুটিতে এখানে হেরে গিয়েছিল শাসক দলের প্রার্থী। আর অনুষ্ঠেয় পুনঃভোটে সমর্থন দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, ইস্তাম্বুলের নির্বাচনে অবৈধ কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতি হয়েছে। দেশের নির্বাচন সংস্থা পুনঃভোটের আদেশ দেয়ার পর এই মন্তব্য করেন তিনি। অপরদিকে, পুনঃভোট আয়োজনের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এই নির্বাচনী জয়ী বিরোধী দলের প্রার্থী। ৬ই মে এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে দেশটিতে। বিরোধী দল সিএইচপি’র বিজয়ী মেয়র প্রার্থী বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র শামিল। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট বলেছে, এই নির্বাচন তুরস্কে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ইতি ঘটাবে। খবরে বলা হয়, শাসক দল একে পার্টির সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে এরদোগান বলেন, পুনঃভোটই দেশের জন্য ‘সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’। তিনি বলেন, আমরা মনে করি এই সিদ্ধান্তই সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ, যেটি গণতন্ত্র ও আইনের কাঠামোর মধ্যে আমাদের সমস্যা সমাধানের অঙ্গীকারকে শক্তিশালী করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রথম দফার ভোটে অবৈধ কর্মকাণ্ড হয়েছে। সুতরাং, দেশের গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণে এই পুনঃভোট গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। তুরস্কের নির্বাচনী পর্ষদে শাসক দলের প্রতিনিধি রিসেপ ওজেল বলেন, পুনঃভোটের ডাক দেয়া হয়েছে। কারণ প্রথম দফার ভোটাভুটিতে কিছু নির্বাচনী কর্মকর্তা সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন না। বেশ কিছু ব্যালট পেপারে স্বাক্ষরও ছিল না। তবে জয়ী প্রার্থীর দল সিএইচপি’র উপ-প্রধান অনুরসাল আদিগুজেল বলেন, এই সিদ্ধান্ত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, একে পার্টির বিরুদ্ধে জয় পাওয়াই অবৈধ। আদিগুজেল বলেন, এই সিদ্ধান্ত একেবারে সপষ্টভাবে একনায়কতান্ত্রিক। তিনি টুইটারে লিখেন, ‘যেই সিস্টেম জনগণের ইচ্ছাকে পাল্টে দেয় ও আইন অগ্রাহ্য করে, সেটি গণতান্ত্রিকও নয়, বৈধও নয়।’ অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক বক্তব্যে সিএইচপির প্রার্থী একরেম ইমামোগলু, যিনি গত এপ্রিলে মেয়র হিসেবে নিশ্চিত হয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনী পর্ষদের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শাসক দলের প্রভাবেই পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনই আমাদের নীতি নিয়ে আপস করবো না। এই দেশে ৮ কোটি ২০ লাখ দেশপ্রেমিক আছেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য শেষ মুহূর্ত অবধি লড়াই করবেন।’ ইমামোগলুর সমর্থকদের একটি দল সকলকে শান্ত থাকতে বলেছে। এক বার্তায় তারা লিখেছে, ‘আসুন সকলে একসঙ্গে দাঁড়াই, শান্ত থাকি। আমরা জিতবো। আমরা আবারো জিতবো।’ প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ তুরস্কের বিভিন্ন স্থানে নগর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে এরদোগানের নেতৃত্বের ওপর জনগণের আস্থা কতটা তারই মাপকাঠি হিসেবে দেখা হচ্ছিল ওই নির্বাচনকে। দেশব্যাপী ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছে শাসক দল একেপি’র নেতৃত্বাধীন জোট। তবে ধর্মনিরপেক্ষ সিএইচপি দল রাজধানী আঙ্কারা, ইজমির ও ইস্তাম্বুলে জয় পায়। স্বয়ং এরদোগান একসময় ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন। ইস্তাম্বুলে ৮০ লাখেরও বেশি ভোটার ভোট দিয়েছিল। শেষ অবধি মাত্র ১৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন ইমামোগলু। তবে আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তা চ্যালেঞ্জ করেছে শাসক দল। ফলশ্রুতিতে, বিরোধী দলগুলো বলছে, শাসক দল নির্বাচন ছিনিয়ে নিতে চায়।