এই প্রথম গ্রহাণুর মৃত্যু-দৃশ্য দেখল নাসা

Posted: 14 এপ্রিল, 2019

একতা বিজ্ঞান ডেস্ক : একটি বিরল ঘটনা দেখা গেল মহাকাশে। চমকে দেয়ার মতো একটি মৃত্যু-দৃশ্য। মহাকাশের অতল অন্ধকারে কীভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় কোনও অ্যাস্টারয়েড বা গ্রহাণু, এবার তা ধরা পড়ল হাব্ল স্পেস টেলিস্কোপের চোখে। এই প্রথম দেখা গেল, মৃত্যুপথযাত্রী ওই গ্রহাণুটির শরীর ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য। আর তার শরীর ছেড়ে বেরিয়ে আসা অংশগুলিই মহাকাশে তৈরি করছে ধূমকেতুর মতো লেজ। তবে সেই লেজ একটি নয়। দু’টি! মহাকাশে থাকা নাসার টেলিস্কোপ হাব্লের দেখা সেই মৃত্যু-দৃশ্যের খুঁটিনাটি প্রকাশিত হতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ। যার মৃত্যু-দৃশ্য এই প্রথম স্বচক্ষে দেখল হাব্ল, সেই গ্রহাণুটির নাম ‘অ্যাস্টারয়েড ৬৪৭৮ গল্ট’। ভগ্নস্বাস্থ্য সেই গ্রহাণুটি রয়েছে সূর্য থেকে ২১ কোটি ৪০ লক্ষ মাইল বা ৩৪ কোটি ৪০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। দু’টি লেজের গ্রহাণু সত্যিই খুব বিরল, বলছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহাণুটির উপর যাঁরা নজর রেখেছিলেন, তাঁদের অন্যতম জ্যোতির্বিজ্ঞানী কুমার রঙ্গনাথন বলেছেন, ‘‘যে দু’টি লেজ দেখা গিয়েছে গ্রহাণুটির, তার একটি লম্বায় ৫ লক্ষ মাইল বা ৮ লক্ষ কিলোমিটার। চওড়ায় সেটি ৩ হাজার মাইল বা ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। যে লেজটি আকারে ছোট, লম্বায় সেটি ১ লক্ষ ২৫ হাজার মাইল বা ২ লক্ষ কিলোমিটার।’’ রঙ্গনাথন জানাচ্ছেন, গ্রহাণুটি আবিষ্কারের ৩১ বছর পর, এ বছরের ৫ জানুয়ারি প্রথম দেখা যায়, একটি লেজ রয়েছে গ্রহাণু গল্টের। তার অস্তিত্ব প্রথম নজরে পড়েছিল হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে বসানো নাসার টেলিস্কোপ ‘অ্যাস্টারয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইমপ্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম’ বা ‘অ্যাটলাস’-এর। দেখা যায়, সেই লেজটার গায়ে বিস্তর ধুলোবালি। টুকরোটাকরা। পরে হাওয়াইয়েই বসানো আরও একটি টেলিস্কোপ ‘প্যানোরামিক সার্ভে টেলিস্কোপ অ্যান্ড রর্যাপিড রেসপন্স সিস্টেম’ বা ‘প্যান-স্টার্স’-এর নজরেও ধরা দেয় সেই লেজটি। অন্যতম গবেষক রঙ্গনাথনের কথায়, ‘‘তার পর কেটে যায় আরও দু’টি সপ্তাহ। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হাওয়াইয়ে বসানো ‘কানাডা-ফ্রান্স-হাওয়াই টেলিস্কোপ’ ও স্পেনে বসানো ‘আইজ্যাক নিউটন টেলিস্কোপে’র চোখে ধরা পড়ে গ্রহাণু গল্টের দ্বিতীয় লেজটি। এই মৃত্যু-দৃশ্য কী সুযোগ এনে দিল বিজ্ঞানীদের সামনে? আর ১০ কোটি বছর পরেই প্রায় অথর্ব হয়ে পড়বে গল্ট। আর তখনই বাজবে তার মৃত্যুঘণ্টা।’’