‘হৃদয়হীন সরকার’

Posted: 03 ডিসেম্বর, 2017

একতা প্রতিবেদক : সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, এ সরকার হৃদয়হীন সরকার। দেশের আপামর মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য দু’বেলা ঠিক মতো খেতে পাচ্ছে না তখন নিজের দেয়া পণ্য বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়ে দেশের মানুষের টিকে থাকাকে দুঃসাধ্য করে তুলেছে তারা। গত ২৫ নভেম্বর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সিপিবি সভাপতি বলেন, সরকার প্রধান আমজনতার সন্তানদের শিক্ষাকে ‘খুচরা জিনিস’ বলে পরিহাস করেছেন আর তার জ্বালানী উপদেষ্টা আরেক কাঠি সরেস তিনি মানুষের দুর্বিসহ সময়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিকে ‘মামুলী বৃদ্ধি’ বলে ঠাট্টা করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের দিক থেকে বারবার বলা হচ্ছে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি আর দিতে পারবে না। আমাদের দিক থেকে সরকারের কাছে প্রশ্ন এটা ভর্তুকি না বরাদ্দ? কারণ বাজেটে যখন প্রতিরক্ষা খাতের জন্য অর্থ দেয়া হয় তখন তাকে বলা হয় বরাদ্দ আর যাদের দেয়া কর থেকে প্রাপ্ত অর্থ সরকার বিলি বণ্টন বা বরাদ্দ দেন তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন বিদ্যুৎ, সার ইত্যাদির জন্য সরকার যখন অর্থ দেয় তখন তাকে বলা হয় ভর্তুকি। বুর্জোয়া সরকারদের এ দৃষ্টিভঙ্গিকে বামপন্থিরা দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখান করছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ (মার্কসবাদী’র) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। হরতালের সমর্থনে রাজধানীজুড়ে প্রতিদিনই প্রচার মিছিল করে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। ২৬ নভেম্বর সকালে হরতালের সমর্থনে কমলাপুর রেল স্টেশন, মতিঝিল শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড়, দিলকুশা, পুরানা পল্টনে প্রচারাভিযান বের হয়। বিকালে হরতালের সমর্থনে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে প্রচারাভিযান শুরু হয়। গুলিস্তান, নবাবপুর হয়ে প্রচারাভিযানটি পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়। পরদিন হরতালের সমর্থনে মিছিল হয় ধানমন্ডি লেক, সদরঘাট, বাহাদুর শাহ পার্ক, জজকোর্ট, হাইকোর্ট এলাকায়। ২৮ নভেম্বর প্রচার সমাবেশ শেষে হরতালের সমর্থনে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে প্রচারাভিযান শুরু হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়, মৌচাক, মালিবাগ রেলগেইটে সমাপ্ত হয়। ওইদিন সকালে হরতালের সমর্থনে রমনা পার্ক, সংসদ ভবনের চন্দ্রিমা উদ্যান ও কাকরাইলের এজিবি অফিসের সামনে এবং বিকালে মিরপুর ১০নং গোল চত্বর থেকে পল্লবী ও মোহাম্মদপুর এলাকায় হরতালের পক্ষে প্রচার চলানো হয়। ২৯ নভেম্বর সকাল রায়েরবাজার বধ্যভূমি সন্নিকটস্থ পার্ক, সকাল ১০টায় গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, বিকেল ৪টায় প্রেসক্লাব থেকে প্রচার মিছিল বের হয়। সন্ধ্যায় হরতালের পক্ষে শাহবাগ এলাকায় হয় মশাল মিছিল হয়। হরতালে সমর্থন দেয় বিভিন্ন প্রগতিশীল গণসংগঠন। এছাড়া ৩০ জন বুদ্ধিজীবী, ২০ জন আইনজীবী, ছাত্র-যুব-শ্রমিক-নারীসহ বিভিন্ন প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন ও জনগণের বিভিন্ন অংশ বিদ্যুতের অযৌক্তিক দাম প্রত্যাহার, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো ও সিটি কর্পোরেশনগুলোতে বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবির হরতালে সমর্থন ও একাত্মতা প্রকাশ করেন।