‘ছিলেন মানুষের নেতা’

Posted: 08 অক্টোবর, 2017

[কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডলের মৃত্যুর পর ঢাকা এবং কুষ্টিয়ার অসংখ্য মানুষ বলেছেন তার সম্বন্ধে, বলেছেন তার চেতনা, স্বপ্ন ও সাধারণ জীবন যাপনের কথা। সেখান থেকে কয়েকটি একতার পাঠকদের জন্য দেয়া হল] আমাদের সাথে সবসময় রাজনীতি নিয়েই আলাপ করতেন, আমার ছোট ভাই কমিউনিস্ট পার্টি করত; তার বক্তব্য শোনার জন্যই আমরা দিনকে দিন দাঁড়িয়ে থাকতাম। উনি জীবনেও নিজের জন্য কিছু করেন নাই, শুধু মানুষের জন্য করেছেন। রেল শ্রমিক ছিলেন, ব্রিটিশ আমলে জংশনে গিয়ে ট্রেন থামিয়ে দিয়েছিলেন। এত সাহস কারো হবে না। কেউ তার সম্বন্ধে খারাপ কথা বলতে পারবে না, দলমত নির্বিশেষে তিনি ঈশ্বরদীর প্রত্যেকটা মানুষের কাছেই প্রিয় ছিলেন। ছিলেন মানুষের আসল নেতা। দ্বীন ইসলাম আমরা তরুণপ্রজন্ম বটবৃক্ষ হারালাম। তার কর্ম জীবন, আদর্শ, দর্শনকে বাস্তবে রূপ দেওয়াই আমাদের কাজ। আমরা সেই দায়িত্বটাই পালন করবো বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হচ্ছি। বিপ্লবী জসিম উদ্দিনকে আমরা দৈহিকভাবে পাবো না, এটা সত্য। তবে, কাজে, কর্মে অনুপ্রেরণা আমরা তাকেই আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করবো। জসিম ভাইয়ের অপূর্ণতা আমাদেরকেই পূরণ করতে হবে। ইচ্ছে ছিল, অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষে জসিম ভাইয়ের বক্তব্য শুনবো। তার বক্তব্যে যে নির্দেশনা থাকবে সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সাধ্যমতো মানুষের মুক্তির সংগ্রাম, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিজেকে আরো উজ্জীবিতভাবে যুক্ত করবো। জসিম ভাই, স্মৃতিতে নয়, অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন– থাকবেন সকল মানুষের চিন্তা, চেতনায়, দর্শনে। লাবণী মণ্ডল প্রথম তাকে দূর থেকে দেখি, কাছে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। সরাসরি পরিচয় বোধহয় ৬৮ সালের শেষের দিকে। ৭১’র পর আমি ঈশ্বরদী চলে আসি। তখন অনেকবার তার বাসায় গেছি। ভাবি, তার ছেলে মেয়ে সবার সাথেই পরিচয় ছিল, তিনি খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তিনি যেটা বুঝতেন সেটাই স্ট্রেটকাট বলতেন, কোন রাখঢাক নাই। আমার মেয়ে ক্লাস টেন পাস করার পর তাকে আমি বলি আজকে তোমাকে আমার নেতার বাসায় নিয়ে যাব, গিয়ে দেখি নেতা আমার কচুর শাক দিয়ে ভাত খাচ্ছেন। তা দেখে, আমার মেয়ে বলল তোমার এত বড় নেতা কচুর শাক দিয়ে ভাত খায়? আমিনুর রহমান তিনি হলেন কমরেড, পার্টি করতেন, আমরা সবসময় দেখছি। তার বক্তব্য শোনার জন্য সবাই দাঁড়িয়ে থাকত, খুব ভাল লোক ছিলেন। সবার খুব প্রিয় ছিলেন। যে যাই করুক তার বক্তব্যের সময় সবাই দাঁড়িয়ে যেত। রাস্তায় দেখা হলেই সালাম দিতাম, ডেকে কথা বলতেন। কত জায়গা থেকে যে মানুষ আসতো, তার সাথে কথা বলতে। ঈশ্বরদী থাকলে প্রতিদিনই বাজরে আসতেন; মানুষজনের সাথে দেশ, কমিউনিস্ট পার্টি এসব নিয়ে কথা বলতেন। আর্নিকা তাসনীম মিতু বিপ্লবীরাও কখনও মরে না, তারা আজীবন তার কর্মের মধ্যে বেঁচে থাকেন। কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডলের বিপ্লবী চেতনা, কর্মকাণ্ড তরুণ সমাজ, ছাত্র সমাজ বহন করবে; তার বিপ্লবী কর্মকান্ড আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে মানবিক সমাজ এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য সমাজতন্ত্রের দিকে। মো. সোহরাব হোসেন ২০০৬ সালে ঈশ্বরদী গিয়ে একদিন ভোর বেলাতে কমরেড জসিম মণ্ডলের বাড়ি গেলাম। দরজায় টোকা দিতেই বের হলেন তিনি। দিলেন সারল্যময় হাসি, সেই হাসি আমি কখনো ভুলতে পারবোনা। সাজেদা বেগম সাজু অল্প দিনের চেনা কমরেড। সেপ্টেম্বরে বাম কর্মী বিশালের মুখে শুনে কমরেড জসিম মন্ডলের বক্তব্য দেখি ইউটিউবে। তার কথা শিহরণ জাগিয়ে তোলে; তিনি বলেছেন হাঁড়ির লবণ নষ্ট করে ব্রিটিশ তাড়ানোর কৌশল। বলেছেন পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা। অনুপ্রেরণা দিয়েছেন নিপীড়িত শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্রগঠনে। রফিকুল ইসলাম অভি