লোকবল সংকটে ফেনীর তিন স্টেশন বন্ধ
Posted: 15 নভেম্বর, 2015
ফেনী সংবাদদাতা: লোকবল সংকটে বেশ কয়েক বছর ধরে ফেনীর তিনটি রেল স্টেশন বন্ধ রয়েছে । এর মধ্যে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে বন্ধ আছে ফেনী সদরের কালিদহ ও ছাগলনাইয়ার মুহুরীগঞ্জ স্টেশান। আর লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ডাবল রেল লাইন প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময় বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেনী সদরের শর্শদী রেল স্টেশনটি। আর তা লোকবল সংকটের অজুহাতে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার ৬ মাস পরও এখনো চালু করা হয়নি।
তিনটি রেল স্টেশন বন্ধ থাকার ফলে স্টেশনের আশপাশের এলাকার মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে স্বল্প খরচে ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে। কালিদহের আলম নামে এক যাত্রী জানান, আগে রেল স্টেশান বন্ধ হলেও এর কোন প্রভাব পড়েনি। বর্তমানে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধের কারণে আমাদের ফেনী যাওয়ার জন্য রেল স্টেশনটি দ্রুত চালু করা প্রয়োজন।
আবুল কাশেম নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কালিদহ স্টেশনে কোটি টাকা খরচ করে নতুন প্লাটফর্ম, আলোকসজ্জা ও কর্মচারীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হলেও স্টেশান চালুর কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় সড়ক পথে আমাদের ফেনী যেতে অর্থ ও সময় দুটোই নষ্ট হচ্ছে। ফেনীর শর্শদী, কালিদহ ও মুহুরীগঞ্জ রেল স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে ম্যাক্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ডাবল লাইন প্রকল্পের আওতায় প্রায় কয়েক কোটি টাকা খরচে দৃষ্টিনন্দন প্লাটফর্ম ও অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু লোকবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না এসব রেল স্টেশন।
অপরদিকে ফেনী রেল জংশনের বাইরে একমাত্র চালু থাকা ফাজিলপুর স্টেশনেও দুটি লোকাল ট্রেনের থামা কমিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মুহুরীগঞ্জ রেল স্টেশনে গেলে শাহিন ও কামরুল নামে দুই ব্যাক্তি জানান, গত ৭ বছর যাবত বন্ধ রয়েছে এই স্টেশনটি। তবে অপরদিক থেকে আসা ট্রেন পারাপারের জন্য আগে মাঝে মাঝে লোকাল ট্রেন বা মালবাহী ট্রেন থামতো। ডাবল লাইন হয়ে যাওয়ায় এখন আর তাও থামে না। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেলের এই অবকাঠামো অযতেœ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি রাতে এখানে বিরাজ করে শুনশান নিরবতা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই স্টেশনগুলো চালু হলে আবার জমজমাট হবে এই এলাকা। লোকজন কম খরচে ফেনীসহ দেশের নানা জায়গায় যেতে পারবে।
এ ব্যাপারে ফেনী রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ফেনীর এই তিনটি স্টেশনে লোকবল না থাকায় স্টেশনগুলো চালু করা যাচ্ছে না। লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে আবার চালু করা হবে স্টেশনগুলো।
তিনি আরো জানান, এক একটি স্টেশানে তিনজন সহকারী মাস্টার, অপারেটর, গার্ড ও অন্যান্য লোকবলসহ মোট ১৬/১৭ জন লোকের প্রয়োজন। চালু থাকা শর্শদী স্টেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ডাবল লাইন করার সময় এই স্টেশনের লোকবল অন্যত্রে বদলী করায় বর্তমানে এই স্টেশনে কোন লোকবল নেই। তাই এটি বন্ধ রাখা হয়েছে।