পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে উত্তরের কৃষকের

Posted: 21 নভেম্বর, 2021

একতা প্রতিবেদক : আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত এ ফলের চারা লাগানো যায়। চারা লাগানোর ২ থেকে আড়াই মাস পর ফল তোলা যায়। প্রতি গাছ থেকে ৩/৪ বার ফল তোলা যায়, যা পৌষ মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ ফলের কোনো বীজ নেই, মৌসুম শেষে পরিপক্ক ফল থেকে আবারো চারা গজায়, সে চারা পরে জলাশয়ে লাগানো হয়। পানিতে জন্মে বলে পানিফল, লতাপাতার মতো জলাশয়ে ভাসতে দেখা যায় পানিফলের গাছ। মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। অনেকে মাছের সঙ্গে মিশ্রভাবেও চাষ করে থাকেন। পানিফলে পানি এবং প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে। এখানকার বাজারে প্রতি মণ পানিফল ৬’শ থেকে ১৪’শ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। বাজার দর ভালো থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা বগুড়ায় পতিত খাল-বিল ও জলাশয় জুড়ে চাষ হচ্ছে পানি ফলের গাছ। লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। প্রতিবছর চাষ যেমন বাড়ছে তেমনি হাটে বাজারে বেচাকেনাও বেশ ভালো হচ্ছে। কম খরচে ভালো ফলনে ভালো দাম পেয়ে কৃষক খুশি। জেলা শহর ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বগুড়ায় উৎপাদিত পানিফল। বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে পানিফল। স্থানীয় বাজারে পানিফল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। বগুড়া শহরের আশপাশের বিভিন্ন বিল, জলাশয়ে এই পানিফল চাষ হচ্ছে। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে পানিফল চাষ করে সফলতা পেয়েছে চাষিরা। উপজেলায় মৌসুমি পানিফল চাষে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে লাভজনক এই ফল চাষ করে অনেক চাষির পরিবারে সুদিন ফিরেছে। চৈত্রকোল, মাদারগঞ্জ, পাঁচগাছি এবং টুকুরিয়া শানেরহাটের খাল-বিল জলাশয়জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ। পানেয়া গ্রামের মৃত্যু গমির উদ্দিনের ছেলে লুৎফর রহমান বলেন, গত ৫ বছর ধরে নাছিরাবাদ বিলের নিচু জমি লিজ নিয়ে পানিফল চাষ করছেন।অই বিলে ৬০ শতক জমিতে এ বছর পানিফল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। তিনি আরও বলেন পাঁচগাছি এলাকায় কয়েকজন চাষি রয়েছে তারাও পানিফল চাষ করে লাভবান হয়েছে।স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জলাশয়ে চাষ হওয়া পানিফল স্থানীয় চাষিদের কাছে ‘পানিফল বা(শিঙ্গর) নামে পরিচিত। নিচু এলাকার বিল জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। নওগাঁয় বর্তমানে ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ফল চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। তেমনই একটি ফল হচ্ছে পানিফল। কৃষি প্রধান এই জেলায় সারা বছরই কিছু কিছু জমি ও বিলে হাঁটুসমান পানি থাকে। ফলে শীতকাল এলেই পানিফল চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েন চাষিরা। কম খরচ, পরিশ্রম আর স্বল্প সময়ে অধিক ফলন হওয়ায় এই ফল চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে নওগাঁর চাষিদের। সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার খাগড়া বিল, দুর্গাপুর বিল এবং মরা বিলে দেখা যায়, আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে যখন জলাশয়গুলোতে পানি জমতে শুরু করে তখন পানিফলের চারা ছেড়ে দেওয়া হয়। এর তিন মাস পর (ভাদ্র মাস থেকে) গাছে ফল আসা শুরু করে। গত বছর পানি ফলের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আরও বেশি জমিতে পানিফল চাষ করছেন চাষিরা। পানিফল তুলছেন শ্রমিক মোহাম্মদ আলী, মোবারক এবং একরামুল হোসেন বলেন, আমরা এখানে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হাজিরা হিসেবে কাজ করি (চুক্তিভিত্তিক দিনমজুর)। প্রতিদিন সকালের নাস্তাসহ ৩৫০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। গাছ থেকে ফল তুলে নিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করে গাড়িতে তুলে দিতে হয়।