রক্তাক্ত বাগদা ফার্মে ইপিজেড নয়: আদিবাসী ইউনিয়ন

Posted: 12 সেপ্টেম্বর, 2021

একতা প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্ম এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী আদি মালিকদের কাছে জমি ফিরিয়ে না দিয়ে জমি থেকে উচ্ছেদ এবং ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ সংবিধান ও মানবাধিকারের চরম লংঘন। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম সংলগ্ন সাঁওতালদের মালিকানাধীন ১৮৪২ একর জমি ১৯৫৪-৫৫ সালে সরকার অধিগ্রহন করে। ১৯৬২ সালে এক চুক্তিপত্রের মাধ্যমে তৎকালীন সরকার পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনকে উল্লেখিত জমি হস্তান্তর করে। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, এ জমিতে আখ চাষ ছাড়া অন্য কিছু করা যাবে না। শর্ত লংঘিত হলে এসব জমি পূর্বতন মালিকদের কাছে ফেরত দেয়া হবে। বর্তমানে চুক্তির শর্ত না মেনে বাগদা ফার্মে ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ চুক্তির বরখেলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০৬ সালের ৬ নভেম্বর দূর্বৃত্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দ্বারা সাঁওতাল পল্লিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ নারী নির্যাতন করা হয় এবং আদিবাসী নেতা শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মট্রি, রমেশ টুটুকে হত্যা করে কিন্তু সাঁওতাল জনগোষ্ঠী, আধিবাসী ইউনিয়ন ও সারা দেশের গণতন্ত্রকামী সংগঠন ও ব্যক্তির ভূমির অধিকারের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার পটভূমিতে তখন ভূমি দখলকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। আবার নতুন করে ইপিজেডের নামে ভূমি দখল করা হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, সমতলের আদিবাসীদের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। স্বাধীন দেশে সাঁওতাল আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অবহেলা, নির্যাতন নিপীড়ন, ভুমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা অসাংবিধানিক। আদিবাসীদের ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃস্টি ঐতিহ্য রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। ইতিমধ্যেই নাগরিক সমাজ, আদিবাসী সংগঠনসমূহ ও সাঁওতাল জনগোষ্ঠী প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সাঁওতালদের জমি অর্থনৈতিক অঞ্চলের নামে লুটপাট করে ভোগদখলের যে নীল নকশা করা হচ্ছে তা স্থানীয় জনগণ প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। তারা গাইবান্ধা জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে প্রশাসনের সিদ্বান্ত থাকলে অন্য কোথাও খাস জমি উদ্ধার করে সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার দাবি জানিয়েছেন।